স্নান সেরে এসে মেঝেতে পা ঠুকে হারু বলত
খেতে দিবি কিনা দিবি শালি ?
খিদেয় আমার পেট জ্বলছে ।
ভদ্রলোকের ভাষা জানত না হারু
মা'কে ঐভাবেই ভালোবেসে বলতে শিখেছিল
তার প্রশস্ত বুকে চিরকাল রোদ নেমেছিল ।
কখনো হারুর বুকে গজিয়ে ওঠেনি মুথা-ঘাস
অঘ্রানের বুকে ভোরের শিশির
বিবিক্ত করেনি মন হারুর কখনো ;
শুধু মন খারাপ হলে আমাকে বলত একাকী----,
'' বাবু ,সেই পেরেম মাইয়াটাকে ভুলতে পারিনি এখনো ।''
ভাষা নাই আশা নাই হারুর প্রশস্ত মনের মাঝে
কখন মিশে গেছে পূর্ণিমায়
একাকী নিরালায় ,
সেদিনও চাঁদের আলোক নেমেছিল
পোয়াতি নারীর মতো লজ্জিত আভায় ।
তখনো আসেনি রোদ উঠোনের বুকে
করেনি কানাকানি শালিকের ঝাঁক ,
শোনা গেল হারু আর নেই পৃথিবীতে ।
নদীর বন্যায় নেমেছিল সে ,প্লাবনের বুক থেকে
দশটি মানুষকে বাঁচিয়ে হারিয়ে গেছে জলে
বুদবুদের মতো ।
তার শোকে কাঁদবে কি রূপসী অঘ্রাণ ?
মনে কেউ রাখবে কি তার জীবন বলিদান ?
খবরের কাগজেও পড়েনি কেউ
মন্ত্রীদের মতো তার মৃত্যুর খবর ।
পৃথিবীরও হয়তো ঘুম পেয়েছিল
শুধু হারুর মায়ের মনে নিষ্প্রদীপ সন্ধ্যা নেমেছিল ।
এখনো আমি স্বপ্নে দেখি তার জীবন বলিদান
দুর্যোগের রাতে
কোন এক দুঃখের অভিঘাতে ।
কেউ কি আমাকে কখনো বলবে আর ?
মন খারাপের বুকে প্রতিধ্বনি হবে কি আবার
'' বাবু ,সেই পেরেম মাইয়াটাকে.............................
****************************************