আমারে ভুলে আছে মুন্সির গাল ভরা লাল পান
আমারে ভুলে আছে আউষের পাঁজা ধান,
বড় পুকুরের পারে নিশাচর জাতসাপ
চৌচালা মসজিদে শিরনীর জুমাবার,
খুৎবার বয়ানে মেরাজের রফরফ
আম্মার বাকসতে জরিদার লালপাড়।


আমারে ভুলে আছে মাতামহ সমাচার
এই খানে ছিল তার জুঁই ফুল লতা ঝাড়,
শীত-ভোর রৌদ্রে ধান রঙা পাটিতে শিশু-ঘুম
ঈদের প্রভাতে সেমাইয়ের রেসেপিতে ঘাসিদুধ,
শ্যামলার সাজিতে ফি-বছর ফেরি করা মৌসুম
ছোট পুকুরের জলে পাতাপচা বুদবুদ।


আমারে ভুলে গেছে গোলদারের ধুলো মাঠ
উঠানের ওপারে তোতলা মেয়েটির শিশুপাঠ,
হাত মাখা সেগুনের কচিপাতা কুড়ি লাল
বিন্নি ঘাসের ওমে সাদা হাস নিল ডিম,
জ্যৈষ্ঠের দুপুরে আমবন, ধুলিঝড়ে পয়মাল
পৌষের সকালে আনাজের বোটাতে স্বেদ-হীম।


আমারে ভুলে আছে ডাহুকের পাটিবন
আমারে ভুলে আছে মৌলতা লালধান,
পশ্চিম মাঠময় কচি-বুট নোনা স্বাদ
ডেরাজের এক কোনে ডোরাকাটা মারবেল,
খালপাড়ে খড়কুটা পোড়ানোর চাঁনরাত
মাতামহ কুর্তায় ভেজানো ঘন-নীল।


আমারে ভুলে আছে জমায়েত রাহবার
আমারে ভুলে আছে মজমার রবিবার,
কাছারির কোনে রাখা মাষ্টারের সাইকেল
ঠুংটাং বেজে যাওয়া এনামেল ওঠাবেল,
আমারে ভুলে আছে দুইহাজার দুই সাল
আমারে ভুলে আছে বহুবহু গতকাল।