১৪*
কেউ নির্দিষ্ট নয়। হাওয়া ছুয়ে যায় সব ----
খুন আর খুনি কেও।
লৌহ আবিস্কারের পর ছুরি ক্রমশ মসৃণ হয়।
প্রেমিক হৃদয়ের পাশে বেড়ে ওঠে ঘাতক পাশাণ।
আরো প্রবল হয়ে ওঠে লৌহ সূচী মুখ।
প্রস্তর ঘষে ঘষে তীক্ষ্ণ হয় আপন ঘাতক।


১৫*
তোমারে কুরবানি দিলাম কন্যা --- বলো গো কবুল
সাক্ষী মর্মর খচিত মিনার --- সাক্ষী চির বর্ষার জল
তোমারে কুরবানি দিলাম কইতর ছানা --- দাও গো চির-দূর স্বাক্ষর
সাক্ষী জল ছলছল তসবির দানা --- সাক্ষী পাথর মিম্বর
তোমারে কুরবানি দিলাম কলিজা ছিনা -- যাও গো ছাড়িয়া কোল
সাক্ষী গাঙের কালা জল ---  সাক্ষী নাড়ি ছেড়া বাঁশের চ্যাঁচারি
তোমারে কুরবানি দিলাম গো কন্যা ---উইড়া যাও গো উড়াল-গাড়া ময়না
তুমি জানো কি জানো না --- নিলুয়া বাতাস জানে
জিন্দা মানষের-ও হয় জেয়াফত জানাজা --


১৬*
কি এক মায়ার ফাফরে ফালাইছো মাবুদ
দুনিয়ার ওজন লইয়া -- বইয়া আছে বুকে
না পারি ফালাইতে না পারি কান্দিতে
নিজের গোরস্তান নিজে দিতেছি পাহারা
চক্ষের পানি-ও তো মুছতে পারিনা
হাতে বান্ধা মোহ-মোহরের হাতকড়া।


১৭*
আচানক দেওই নামলে হুড়োহুড়ি লাগে দুনিয়ায়
লতায় পাতায় পশুপাখি গন্ডগায়
ধানের তলই রান্ধনের খোলা চুলায়
এ সমস্ত হুড়োহুড়ি'র লগে
শিয়াইল্লা দেওই'র মধ্যে ওঠে ---  ফিকিফিকি রইদ
আমার মৌতের কালে এমন
আচানক দেওই নামে, য্যানো গো মাবুদ!


১৮.
আমাকে দন্ড দেয়ার পরে
হেঁটে যাবো ধীরে
অগ্নি গলা নদীটার তীরে।
তোমাকে না পাবার বেদনা নিয়ে
দাড়াবো তোমার পুলসিরাতে।
তোমার নামে গো খোদা
ঝাপ দিবো আত্মহননের লাগি ----
দেখলাম ভাবিয়া
তোমারে না পাওয়ার চেয়ে
বড় কিছুনা জাহান্নাম হাবিয়া।


১৯.
যদি পেয়ে যাই ফের স্বর্গবাস
তবে কি আমি হবোনা আদি আদম
বুকে চিরে বানাবো না এক হাওয়া
খাবো কিনা দুই একটা সুমিষ্ট দন্দম
স্বর্গের দ্বারে বসে রবে ইবলিশ শয়তান
তবে কি খোদা বানাবেন ফের দুনিয়া ময়দান
তাই তোমারে বলি গো খোদা
যদি নাই দিতে পারো নিজ হৃদ-কলমে বাস
আমারে দিওনা লোভ ---- সামান্য বেহস্তবাস।


২০.
আলোটুকু নষ্ট হয়ে যায়
আলোর স্বভাব এমন নয়
তবু আলোটুকু নষ্ট হয়ে যায়!


২১.
আলো -- অন্ধকার ধুয়ে ফেলি চলো।


২২.
ইশৎ উষ্ণ ভূমি তলে রুয়ে দিয়ে এক ফোঁটা সমুদ্র ফেনা। কেউ দেখবে না, ক্রমশ স্ফীত হবে ভূমি। ফসলের ছিটেফোঁটা খুটে খেয়ে ঠোঁট মুছবে জীবন পাখি। একাকি নরম পলির ভিতর জন্মাবো ধিরে, মাটি চিরে-- দেবো উঁকি। এমন কি জন্মের সময় পাশে থাকবেন মা। শুধু একা জন্মের বেদনা খুলে মেলে দিবো দুটি পাতা। কেউ জানবেনা তা, কি ব্যাথার হাওয়া, লাগে দোল। কোন আনবোল পাখি রুয়ে থুয়ে গেলো পাজরের হাড়। খোদাই মালুম কেনো জন্ম যন্ত্রণা ফিরে আসে বারবার।


২৩.
জন্ম যন্ত্রণার গাছ থেকে নামাও আমার
কলঙ্ক কঙ্কাল। কত কাল রবো ঝুলে আর।
হাড়ের মই, বইবার ক্ষমতা ছিল কি আমার?
তবু নিজ মৃত্যু গুলো জড়ো করে এমন
সিড়িঘর, রক্ত ঝরঝর পোক্ত পুল, সফেদ
তুলতুল শোক, মুখোশ পোশাক ঝুলানো
আলনা আলমিরায়। মুছে যায় আয়ুরেখা,
খুড়ে কামার্ত পরিখা --- নিজ হস্তে। দৈর্ঘ্যে প্রস্থে --- জন্ম শোক মৃত্যু অবধি হোক।


২৪.
আমারে লইয়া যাও --- লইয়া যাও গো সাই
যেমন চাঁদ তার কলঙ্ক রে লইয়া যায়।


২৫.
নদীটা বইয়া যায় লইয়া যায় শাখা প্রশাখা
কার জলে কে ভাসে, কারে নিয়া যায় যে
সব দেখা হয়ে গেলে থাকে কিছু চির অদেখা


২৬.
আমাকে খুঁটে খেয়ো পাখি
আমাকে শুষে নিয়ো গাছ
আমাকে ঢেকে দিয়ো মাটি
আমাকে মুছে দিয়ো বাতাস


২৭.
আমি কি থাকবো না পালকের উষ্ণ অভ্যন্তরে
আমি কি ভাসবো না পলি চেরা নদীর জলে
আমি কি থাকবো না সুপ্ত - বীজের অন্তরে

২৮.
তোমারে মশক কইরা
ইনফিনিটি ছাড়িয়ে গেল এক আলিফ টান
হৃদয়ের বাক্য ছাড়া বড় কি মুখের জবান?


২৯.
লানত্‌ গজব যা কিছু দাও না খোদা
কবির হৃদয়ে থাকে সৃষ্টির স্পর্ধা


তুমি কি পারো কিছু? পারে কোন জন
মহান কবিতা সে তো খোদার কোরান!