বিদেয় নেয়া হয়নি যে,
কি কথা ছিলো মনের গভীরে, তা কওয়ার আগেই
রেলের চাঁকাগুলো চনমন গড়িয়ে চল্লো সামনের দিকে।
সিঁটি দিয়ে এগুতে লাগলো, আর আমি বেশ জোরে দৌড়েই
হাতলটা ধরে, চলমান রেলে প্রবিষ্ট হলাম-
পেছনে তাকানোর ফুরসতটাও পেলাম না।


সে হাত দু’টো নেড়ে, বিদেয় জানিয়েছিলো কিনা,
অপলক চোখে চেয়ে ছিলো কিনা,
আঁখি দু’টি হতে জল ঝরেছিলো কিনা,
অগোচরে শাড়ির আঁচলে তা মুছেছিলো কিনা,
না, দেখা হয়নিকো।


লক্ষ্য করা হয়নি, তার কপালের সামনে ঝুলে থাকা চুলগুলো
চলন্ত ট্রেনের বাতাসে এলোমেলো উড়েছিলো কিনা,
খোঁপায় ঝোলানো জুঁই’র মালাটি অগোচরে দুলে উঠেছিলো কিনা,
আলতা রাঙানো পায়েতে ধুলোর বহর যেয়ে
উটকো প্রলেপ লাগিয়ে দিয়েছিলো কিনা,
না, কোনটাই লক্ষ্য করা হয়নি।


কারণ, আমি আমার জামার আস্তিনটা গোটানোর চেষ্টা করছিলাম,
নিজেকে বীরের বেশে রাখবো বলে ব্যর্থ প্রচেষ্টায় রত ছিলাম,
কোন আসন খালি না পেয়ে হাতলটা ধরে
নিজেকে সামলে নেবার চেষ্টা করছিলাম,
আর সবচেয়ে বড় কথা, ওই সেই নাবলা কথাগুলোকে
মনের গভীর থেকে বের করে এনে,
আবার আউড়ে যাবার চেষ্টায় বিভোর ছিলাম...


(“দ্বিভূজ” কাব্য থেকে)