একটু হাঁটতে চেয়েছিলাম,
প্রাণ ভরে ভোরের স্নিগ্ধ বাতাসের ঘ্রাণ নিয়ে-
একটু হাঁটতে চেয়েছিলাম,
ভোরের শিশির ভেজা ঘাসের উপর দিয়ে-
কিন্তু হাঁটা হলোনা, পথের কাঁটাগুলোর জন্যে।
একটু হাঁটতে চেয়েছিলাম, সেই কাকডাকা ঊষায়-
ভোরের প্রার্থনাটা শেষ করে-
যখনও ঘাসের উপর শিশিরগুলো উঁবে যায়নি,
বাঁশবাগানের জোনাকিগুলো কেবল ঘুমুতে যাবার চেষ্টা করছে-
শান বাঁধানো পুকুর ঘাটের ওম ওম জলে
কেউ পা ধুতে আসেনি তখনও, যার উপরে এখনও কুয়াশার প্রলেপ পড়ে আছে,
পুকুরে মাঝখানে নলখাগড়ার ডালটা থিরিথিরি
জলের সাথে নড়ে নড়ে উঠছে, ওখানে এখনও কোন লাল ফড়িং এসে বসেনি।
গাছের শাখায় বসে টুনটুনির বাচ্চা পাখিদুটো মায়ের পাখার নীচে বসে
আড়ামোড়া খাচ্ছে-
আবির রাঙানো সূর্যটা এখনও ওদের পাখায় এসে আছড়ে পড়েনি।
খুকুমনি মায়ের আঁচলে মুড়িয়ে নিদ্রামগ্ন,
এখনও ঘুম পাড়ানি মাসি-পিসিরা ওর চোখ থেকে চলে যায়নি।
আদরিনী মা এখনও হেসেল ঘরটা লেপে,
প্রাতরাশের যোগাড় যন্ত্র শুরু করেনি।
বকুল তলায় দু’একটা করে ফুল ঝরা শুরু করেছে-
কিন্তু মালীর ছোট্ট মেয়েটা শাড়ীর আঁচল পেতে, এখনও কুড়োতে আসেনি।
কদিন আগে ঝড়ে ভেঙ্গে যাওয়া
জামরুল গাছটার ডালের ফাঁক দিয়ে, রবির সোনালী আলো
এখনও উঠোনের কোণে থাকা ফনিমনসার উপর এসে পড়েনি।
একটু হাঁটতে চেয়েছিলাম নিবিড় প্রান্তরের পথটা ধরে-
কিন্তু হাঁটা হলোনা কাঁটাগুলোর জন্যে,
কে যেনো নিপুন ভাবে হাঁটা পথটায় কাঁটাগুলোকে
বিছিয়ে রেখে গেছে অনেক আগেই, যাতে করে পাদুটো রক্তাক্ত হয়-
তাই আর প্রাণ ভরে হাঁটা হয়নিকো আর।