জলের তলায় হাবুডুবু খেতাম শৈশবে। হাবুডুবু খেতে খেতে একদিন সত্যিই ডুবে যাচ্ছিলাম। আমার বোন ছিল ডাঙ্গায় আর আমি তলিয়ে যাচ্ছিলাম জলের তলায়। হাউমাউ করে কেঁদে একটি নৌকার মাঝিকে ডেকে জলে ঝাঁপ দিয়েছিল আমার সে বোন। আমার থেকে চার বছরের বড়। আমরা দিদি বলেই অভ্যস্ত। আজ আমার ছেলেটাকে ও মেয়েটাকে সাঁতার শেখানোর সুযোগ হয়নি। হাবুডুবু খাওয়ার জায়গা নাই, সুযোগটাও নাই। বইয়ের পাতায়, সিলেবাস ও সৃজনশীলতায়, গাইড বইয়ে, শিক্ষকদের দেওয়া আলাদা বইয়ের মাঝে হাবুডুবু খায়। জল নেই তবে হাবুডুবু খাচ্ছে।
আমি এখন জলে হাবুডুবু খাইনা কিন্তু ডুবে যাই চিন্তার অতলে। তল খুঁজে পাইনা। কর্মের দায়িত্ববোধ, সংসার ও সামাজিকতার এবং অপতৎপরতার কবলে পড়ে প্রতিনিয়ত হাবুডুবু খাচ্ছি। যারা ক এর  পরে কি লিখলে কলা হয় জানেনা  তারা আজ কোটিপতি। যার মাথায় বেল ভাঙ্গে সে কিছু কি পায়? শুধু তার মাথাটা ভাঙ্গে। আর অল্প শিক্ষিত মানুষের হাতে অঢেল টাকা চলে যাওয়াতে সম্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে যাচ্ছেতাইভাবে।
ড হুমায়ুন আজাদ স্যারের সেই বিখ্যাত উক্তিটি এখন আরো বেশি বেশি টের পাই হাড়েহাড়ে " একদিন সবকিছু নষ্টদের দখলে চলে যাবে।"
হাবুডুবু খাচ্ছি। খেতেই আছি। দেখা যাক হাবুডুবু খেতে খেতে কখন তলিয়ে গিয়ে হঠাৎ মিরাকল হয়ে ফিরে আসতে পারি কিনা! বর্তমানে নৌকার মাঝিরা আর এগিয়ে আসে না। কারন তারা ঘোলা জলে বড়বড় রুইকাতলা অথবা আট-দশ কেজি ওজনের  মাছ ধরতে ব্যস্ত। আমাদের মত হাবুডুবু খাওয়া মানুষদের জল থেকে উঠিয়ে আনার সময় তারা কোথায় পাবে?


#বেনাপোল
২৭/০১/২০২১