প্রস্ফুটিত গোলাপের মতো তিল তিল করে--
                                       গড়ে উঠেছে সভ্যতা ;
সিন্ধু,নীল আর টাইগ্রিসের উপত্যকায়
যে পুষ্প-কোরক একটু একটু করে পাপড়ি মেলে
পরাগ ছড়িয়ে দিয়েছিলো সারা পৃথিবী জুড়ে--
সেই পুষ্পরেণুর পরাগায়নে সুসজ্জিত বিশ্ব-ব্রহ্মাণ্ডে
বিকশিত হয়েছিল অজস্র সভ্যতার পারিজাত।

পরিণত সভ‍্যতা আজ
                   হাজারো প্রশ্নচিহ্নের সামনে দাঁড়িয়ে!
ব‍্যক্তি-স্বার্থ, ব‍্যক্তি স্বাধীনতার নামে যথেচ্ছাচার,
লোভ-লালসায় জর্জরিত আজ মানবিক সভ‍্যতা!
যান্ত্রিক মানুষের ভীড়ে পদদলিত হচ্ছে
                                     মানবিকতার জীবন্ত লাস!
প্রেম-ভালোবাসা,শ্রদ্ধা,বিশ্বাস
                                 হয়ে যাচ্ছে বাজারজাত পণ্য ;
আধুনিকতার নামে চলছে আদিমতার বাড়-বাড়ন্ত!
ধর্মের নামে চলছে ভণ্ডামি,হিংস্রতা আর দানবতা,
অন্ধ বিশ্বাসের যূপকাষ্ঠে আত্মাহুতি দিয়ে
ঐহিক শান্তির চেয়েও পারলৌকিক বিলাসের লোভে
লালায়িত পুন‍্য-লোভীরা ছুটছে
         মানবিকতা পদদলিত করে জ্ঞানকাণ্ডহীন হয়ে।
কৃত্রিম সভ‍্যতা গড়ে তোলার জন‍্য কুঠারাঘাত হানছে
                                        বিশ্ব প্রকৃতির বুকের উপরে ;
দুর্নীতির পাহাড় রচনায় ব‍্যস্ত
                                        ব‍্যষ্টি,সমষ্টি, রাষ্ট্র, প্রশাসন ;
যেকোনো সময়ে ধস নেমে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে
                                             গোটা মানবিক সভ‍্যতা!

প্রস্ফুটনের চরমতম পরিণতির পরেই
ঝরে পড়ার বিষাদঘন মুহূর্ত হয় সমাগত ;
এযে আগমনি সুর-লহরীর অমোঘ চরম পরিণতি !
অনুরণনের জের কাটতে না কাটতেই বেজে ওঠে
                                          বিজয়ার বিষাদের সুর!
আনন্দঘন পরিণতির পরে----শ্মশানের নিস্তব্ধতা!

কিন্তু সভ্যতার প্রস্ফুটন তো আজও অসম্পূর্ণ !
গতিশীল সভ্যতার পাপড়ি যেন কীটের দংশনে
অকালে শুকিয়ে আসছে ; অচিরেই হয়তো সে
বিষাদের জ্বলন্ত চিতায় পুড়ে খাক হয়ে যাবে !
বিধ্বংসী মিসাইলের আঘাতে
                                সভ্যতার পুষ্পদল ছিন্নভিন্ন !
গোলার ধ্বংসানলে  অগ্নিদগ্ধ হয়ে সভ্যতা আজ
ভস্মীভূত হওয়ার প্রতীক্ষায় অপেক্ষমাণ ।

চোখের সামনে এই ধ্বংসলীলা দেখার চেয়ে
অনেক শ্রেয়ষ্কর ছিলো নিরক্ষর নদীমাতৃক সভ্যতা ।

                        ====সমাপ্ত====