অবগুণ্ঠিতা পরিণীতা বধূ জীবনের সঙ্গিনী ,
আরেকটি বধূ অপরিণীতা কাব্যের প্রণয়িনী ।
পরিণীতা বধূ গোধূলির পরে দেয় দেখা কাছে এসে ,
অপরিণীতার মুখখানি ওঠে মরম মুকুরে ভেসে ।
কল্পলোকের মঞ্জুষা খুলে অনামিকা নাম তার —
দিলাম বলেই পরিচয়খানি জানিল না কেহ আর ।
পরিণীতা বধূ ভালোবাসে মোরে সোহাগের ছোঁয়া দিয়া ,
কাব্যের ভাষা দিয়া ভালোবাসে অপরিণীতা সুপ্রিয়া ।
কাব্যের হাসি সহসা থামিল এলে মোর প্রিয়তমা ,
দূরে সরে গেল ধীরে ধীরে মোর অনামিকা অনুপমা ।
পরিণয় ডোরে বাঁধিয়া যাহাকে আনিয়াছি আমি ঘরে
অনামিকা বধূ মরু তৃষা নিয়ে তাহাকে লইল বরে’ ।
মুক্ত তবু মুক্তির স্বাদ পেল না কো অনামিকা ,
মুক্তির মাঝে প্রীতির বাঁধনে দেখিল আলোক শিখা ।
দীপ্ত আলোয় ডুবে গেল তার প্রেমের হৃদয়খানি ,
ফিরে এসে মোরে উপহার দিল কবিতার ভাষা আনি ।
পরিণীতা মোরে উপহাস করে ভ্রূকুটির মায়াছলে ,
অনামিকা তবু ভালো বাসে তারে পরিণীতা মোর বলে ।
পরিণীতা বধূ ভালোবাসে বটে অনামিকা নাম যার—
তবু তার মনে সংশয় এসে দোলা দেয় অনিবার ।
কারে কতটুকু ভালোবাসি আমি সে কথা ভাবিয়া মরে ,
ভালোবাসা যায় দোঁহারে সমান বুঝাব কেমন করে !
প্রদীপ-শিখার চারিদিকে সম আলোকের বিকিরণ
পৃথিবীকে পারে ঢেকে দিতে সেই আলোকের আভরণ ।
একটি সূর্য আলোকিত করে এমত কত যে ধরা ,
সমানে বিলায় দীপ্ত আলোক গৌরবে সোনা ঝরা ।
কিন্তু তাহাতে দীপ্তি তাহার , আলোকের পরিমান
কমিয়া যায় না , করে না কেহই তার সাথে অভিমান ।
বিলাসের রানী শুধু পরিণীতা সে কথা নিজেই জানে ,
অনামিকা শুধু কাব্যের রানী সে কথাটা নাহি মানে ।
ভালোবাসে তারা একে অপরে ভালোবাসে তারা আমাকে ,
তবু তার মাঝে কোন্ অনুভূতি অব্যক্ত হয়েই থাকে ।
কাউকে সে কথা বুঝাতে পারি না বুঝিবে না কেহ মোরে ,
কিশোর শেষ না হতেই যাহাকে বাঁধিয়াছি প্রীতি-ডোরে —
কী করে তাহাকে মুছে ফেলি আমি হৃদয়ের পাতা থেকে !
অথচ আমার  পরিণীতা বধূ আঁখি মোছে তারে দেখে ।
অনামিকা আর পরিণীতা বধূ ভালোবাসে তারা মোরে ,
সীমাহীন পথ-ঘরের সীমার মিলন হবে কী করে !
ঘর মোরে টানে ঘরের ভিতরে , পথ টেনে নেয় বাহিরে ,
জানি না তো আমি কোথায় যাইব ,পথ জানা মোর নাহিরে ।
                     ###############