অনামিকা মোর প্রিয়াকে দেখেছি মানস নদীর ধারে ,
সেদিন থেকেই আমার এ মন উন্মুখ দেখিবারে ।
তাই রোজ রোজ তাহার কাছে যাইতাম তৃষা নিয়া ,
সুখ-দুখ দিয়া দোলনার খেলা খেলিত আমার প্রিয়া ।
প্রেমের বাণী শোনাত যখন হাসিত লাজুক মেয়ে ,
তৃষিত হৃদয় তৃপ্ত হইত ফল্গুর ধারা পেয়ে ।
‘এই শোন ’ বলে ডাকিত যখন ফিরিতাম তার দিকে ,
ফিক করে হেসে ‘ কিছুই না বলা ’ বুঝিতাম ভাষাটিকে ।
কিন্তু যখন অভিমান রোষে বিব্রত হত মন ,
চোরা অনুভূতি দংশিত মোরে সতত অনুক্ষণ ।
নিলেও বিদায় আসিতাম ফিরে দুর্বার প্রেম-বানে ,
কেন মোর প্রিয়া নির্বাক হত , খুঁজিতাম তার মানে ।
অভিমান তার ভাঙিত যখন মিষ্টি লাগিত তারে ,
মনে হত তারে স্নাতা এক বধূ প্রেমের সরসী পাড়ে ।
অভিমান তার আলিঙ্গনেই বাঁধিলে আবার বুক ,
আমিও তখন মান ভাঙাইতে হইতাম উন্মুখ ।
এমনি করেই দিন যেতে যেতে আসিল বিপর্যয় ,
অভিমান রোষে আচমকা এল জীবনের পরাজয় ।
সে মান ভাঙাতে ব্যর্থ হলাম , হইলাম ঝড়ে আহত ,
প্রলয়কারী ঝড়ের দাপটে হৃদয় হইল ক্ষত ।
হৃদয়ের ক্ষত শুকাল যখন সন্ধ্যার আবছায়—
দাঁড়াল যে এসে বধূয়ার বেশে হৃদয়ের আঙিনায় —
হৃদয়-সোফায় বসিয়ে তাহারে লয়েছি আপন করে ,
অনামিকাকে তবুও দেখেছি স্মৃতির বাসর ঘরে ।
স্মৃতির বাসরে ফুল-শয্যায় কাব্যের রানী করে
পেয়েছি আবার আপন করিয়া অনামিকা নাম ধরে ।
                 ###############