কল্পলোকের গল্প-জালে পদ্মপুরান ভরা  কাব্যরসে ,
ছন্দ জাদুর ললিতকলা কর্ণ কুহরে পশে ।
বাংলার অনন্য রত্ন কবি বিশারদ—
বিজয় গুপ্ত কাহিনী চিত্র সাহিত্য মহানদ—
এঁকেছেন অতি সন্তর্পণে ,
স্বর্গ-মর্ত্য যোগসূত্র সাহিত্যের বিশাল অঙ্গণে ।
দৃঢ় প্রত্যয়ের অধিকারী চাঁদ বিখ্যাত সদাগর ,
প্রমান করেন—দেবতা নহে মানুষ শ্রেষ্ঠতর ।
প্রধান চরিত্রে স্থাপন করেন বনিক চাঁদের দুলাল —
লক্ষ্মীন্দর  আর চাঁদের জীবন মনসা করেন বেহাল ।
নায়িকার ভূমিকায় সুনিপুন হাতে বেহুলা’ করেন সৃষ্টি ,
ভারতীয় সতী-সাধ্বী নারীর সেকালের মহা কৃষ্টি ।
লৌহ বাসরে নিচ্ছিদ্র ঘরে কী করে যাপিল তারা !
কী করে পশিল বিষধর ফণী নিয়তির এ কি ধারা !
কী করে ভেলায় পৌঁছে গেল বেহুলা স্বর্গদেশে !
মৃত স্বামীকে বাঁচাল কী করে সেজে নর্তকী বেশে !
কার্য-কারণ স্বাভাবিক নীতি ,
অতি লৌকিক ঘটনাই বুঝি ধর্ম-মতের রীতি ?
সর্বজন স্বীকৃত যা নয় , সত্যি হয় কি তা ?
যুক্তনিষ্ঠ মনন সত্তা মানে না কোনই ভনিতা ।
শতদল-পর্ণে নেয় কি জন্ম মানুষ কি সুরাসুর !
মনসার জন্ম সেথায় হয়েছে , বিষহরি স্বর্গের সুর !
মহাদেব তার জন্মদাতা , জরৎকারু স্বামী ,
আস্তিক মুনি পুত্র তাহার , হাসে অন্তর্যামী !
কাকোদর-বিষ মহামূল্যবান ঔষধ জীবনদায়ী ,
সর্পদেবতা তাইতো পূজ্য । মনসার স্তন্যপায়ী—
সন্তান নহে , নহে সম্ভব—
পরম্পরায় কত অবাস্তব
অন্ধভাবে মেনে নিতে হয় , ভক্তি নির্বিচারে ,
অন্ত সলিলা প্রবাহিত মন দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়ে ।
       *********************