কাকের ডাকে প্রভাত জাগে আমার নিকেতনে ,
ঠিক তখনি দোয়েল এসে বসে বাতায়নে ,
বেলির শাখে শিস দিয়ে সে
মন ভুলিয়ে এক নিমেষে
উড়ে গিয়ে পালক ঝরায় সবেদার মগ ডালে ।
শালিক জোড়ার কিচির মিচির ভোরাই সুরের তালে ।


কপোত যুগল বসে ছাদে
উড়ে এসে একটু বাদে
বাক্ বাকুম করে জানায় ভোরের স্বাগতম ।
ঝাঁক বাঁধিয়া চড়ুই এসে করে সরগরম ।
হলদে পাখি ইস্টিকুটুম জানায় শুভ সমাচার ,
টুনটুনিটা বসে এসে কাঁচের ’পরে জানালাটার ,
প্রতিপক্ষ তাড়িয়ে দিয়ে
সঙ্গিনীকে সাথে নিয়ে
বাঁধতে চায় সে ঝোপের মাঝে ছোট্ট সুখের নীড় ।
সকাল থেকে সাঁঝ অবধি পাখ-পাখালির ভীড় ।


মনে বহায় শান্তি ধারা ,
আসে ডাহুক সঙ্গী হারা ,
এক নিমেষে পালিয়ে যায় সে চোখকে দিয়ে ফাঁকি ,
তবু আমি এদের নিয়েই আনন্দেতে থাকি ।


পাশের ঝিলের মাছ ধরিয়া মাছরাঙাও আসে ,
পানকৌড়ি ডুব মারিয়া এ পাড় এসে ভাসে ।
ঝিলের জলে হংস মিথুন করে জল খেলা ,
ফিঙে পাখি উঁইপোকা ধরে সাঁঝ বেলা ,
টুক করে পোকা নিয়ে
আবার বসে ডালে গিয়ে ,
ঝাঁকে ঝাঁকে টিয়েপাখি কোথায় উড়ে যায় !
বলাকারা যায় উড়িয়া অচিন ঠিকানায় ।


ভান করিয়া বাজ পাখিটি নারিকেলের শাখে ,
চুপটি করে বসে থাকে লক্ষ্য ঝিলে থাকে ।
ডানা মেলে শূন্যে ওড়ে শঙ্খচিলের ঝাঁক ,
নিঃঝুম দুপুরে শুনি ঘুঘু পাখির ডাক ,
খুঁজে খুঁজে পাই না দেখা
উঁকি মেরে একা একা ,
কান পাতিয়া শুনে যাই তার একক গলার স্বর ।
অলস পিকের কুহু তানে মনটা নিরন্তর
উদাস হয়ে যায় হারিয়ে ,
সময় কখন যায় গড়িয়ে ,
আবার ফিরে আসে এ মন নিজের আস্তানায় ।
হুতুম-পেঁচা ডাকে রাতে , মন তাতে চমকায় ।


অতিথি মুনিয়া আসে ক্ষণ কালের তরে ,
তাল গাছে দল বেঁধে বাবুইয়েরা চড়ে ,
সুদক্ষ শিল্পী ওরা ,
সুখ্যাতি বিশ্ব জোরা ,
মনে তাক লেগে যায় দেখে কারু-কলা ,
ওদের সঙ্গে করেই মোর পথ চলা ।


মাঝে মাঝে বুলবুলি
খেয়ে যায় ফুলগুলি ,
কচি ফল রাখা দায় নেই নিস্তার ।
তবুও এদের নিয়ে আনন্দ অপার ।


কাঠঠোকরাও আসে
আমাদের আশেপাশে
জানান দেয় সে এসে উপস্থিতি তার ,
কাকলিতে মুখরিত মোর চারিধার ।
    ##############