তোমাকে দেখেছি হে জন্মভূমি
হাসান মাহমুদ


তোমাকে দেখেছি আমার স্বপ্নে আঁকা মানচিত্রে
দেখেছি দাগ টানা হাজারো মিত্রে।
দেখেছি এক টুকরো লাল সবুজের সমারোহে,
বেদনা ভরা শেফালি ফুলের হৃদয়ে।


তোমাকে দেখেছি মাধবী কাননে
দেখেছি পদ্মের মুকুলে,
দেখেছি ঢেউ দোলা শাপলা ফুলে।


তোমাকে দেখেছি ভোরের শিশিরে
সবুজ শ্যামল ঘাসের বুকে,
দেখেছি গগনের লালচে রবির ভিতর
লুকিয়ে থাকার সুখে।


তোমাকে দেখেছি নদীর ধারে
সাদা কাশফুলের ছোঁয়ায়,
তোমাকে দেখেছি নির্জনে
নিভৃতে নদীর সফেনের মায়ায়।


তোমাকে দেখেছি শঙ্খচিল -
শালিকের উড়ার আনন্দে,
দেখেছি রূপালি দিনের সুখের জীবনানন্দে।


তোমাকে দেখেছি কাঠের চশমায়
পানকৌড়ির ভিতরে,
দেখেছি ঘুঘু, ময়না আর
নাম না জানা কত বিহঙ্গের চাদরে।
দেখেছি বিল-ঝিল হাওর -বাওরে,
নদী -নালা হাজারো ভঙ্গিতে,
দেখেছি সন্ধ্যার লাল হলুদ গোলগাল সূর্য্যিতে।


তোমাকে দেখেছি সোনালি কানে
আউসের খেতে বেড়ে উঠতে,
তোমাকে দেখেছি কার্তিকের নবান্নে
কৃষকের হাসিতে।
তোমাকে দেখেছি সন্ধ্যার পৌষ
পার্বণ লক্ষ্মী পেঁচার ডাকে,
দেখেছি আলতা পায়ে চলা মেয়েটির গায়ে,
দেখেছি কেয়া বনের ফাঁকে।
তোমাকে দেখেছি আম কাঁঠাল আর
হাজারো ফলের মিষ্টি গন্ধে,
শিউলি, গোলাপ, গন্ধরাজ
বেলি চাপা কৃষ্ণচূড়ার ছন্দে।
তোমাকে দেখেছি আষাঢ় কর্দমে,
দেখেছি পল্লী ছেলের উল্লাস হর্দমে।


তোমাকে দেখেছি এ মোর স্বাধীন বাংলায়
আমার মায়ের আঁচলের ভিতরে,
দেখেছি বাবার পাঞ্জাবির সুগন্ধি আ তরে।
তোমাকে দেখেছি হে জন্মভূমি
আমার দৃষ্টির সীমাহীন দূরে,
যত দূর চোখ যায় অচেনা কোনো ঘোরে।


সময়,
১৭/০৮/২০২০