একই কবিতার শরীরে নারী, পুরুষ, জন্ম, জরা, হাসি, কান্না, অভিযোগ
অভাববোধ, ভালোবাসা, বিরহ, পাপ, পুণ্য, ক্ষোভ, কাম, স্পর্ধা, লোভ
সব, সব জড়িয়ে থাকে, কবি তার ইচ্ছের স্পর্ধায় বিনির্মাণ করে
কবিতার শরীর, আমার এই সদ্য ভূমিষ্ঠ কবিতা, আমার থেকে
পিতা মাতার ভালোবাসা, পূর্ব পুরুষের স্নেহ নিয়ে বেড়ে উঠে, তার
খাদ্য সবুজ প্রকৃতি, মৃদু হাওয়া, উত্তপ্ত সূর্য, রাতের চাঁদ, আকাশের তারা,
নারীর প্রেম, পুরুষের শৌর্য, আরও কত কি । সময়ের স্রোতে শৈশবে  
পৌঁছে পাল্টে যায় কিশোর কবিতার বিষয়বস্তু, মা বাবার স্নেহ, সততা ও
আদর্শের শিক্ষা, চরিত্র গঠন, সামাজিকতা ও মূল্যবোধ । এই সব
শিখতে শিখতে শিশু কবিতা পৌঁছে যায় সুতীব্র যৌবনের ঘূর্ণিস্রোতে,
বড় বেপরোয়া সে যৌবন, প্রেম, বিরহ, কাম, ক্ষুধা, প্রতারণা, পাওয়া
না পাওয়ার কঠিন ও অসম সমীকরণ । গতির পূজারী, শক্তির পূজারী
যৌবন, সে তার তার সুতীব্র গতিতে সব ভেঙ্গে চুরে নতুন করে গড়ে
তোলে তার নিজের ছাঁচে। তার শক্তির কাছে হার মানে বাদবাকি অস্তিত্ব ।


সব কবিতার খাতায়ই যৌবনের কবিতার জয়জয়কার, যৌবনের কবিতাকেই
তোমরা প্রেমের কবিতা বল, বিরহের কবিতা বল , যৌবনের কবিতাকেই
তোমার কবিতা বল । যৌবনের জয়গান গাওয়াকেই তোমরা কবিতা বল ।
যৌবনের কবিতার পর প্রেক্ষাপটে আসে প্রৌঢ়ত্ব, সমৃদ্ধি, সংসার, সন্তান,
আয়, উন্নতি প্রৌঢ়ত্বের কবিতার মুল উপজীব্য । প্রৌঢ়ত্বের পর প্রেক্ষাপটে
আসে বার্ধক্য,  আধ্যাত্মিকতা , ধর্ম, জীবন, ইহকাল, পরকাল এইসব
জুড়ে থাকে বার্ধক্যের শরীর জুড়ে । এরপর কি ? মৃত্যু ? না না না,
কবিতার মৃত্যু নেই, বার্ধক্য শেষে কবিতা আবার ফিরে যায় নতুন জন্মে,
জন্ম, শৈশব, যৌবন, প্রৌঢ়ত্ব, বার্ধক্য । এই ভাবে, এই চক্রে চলতে থাকে
কবিতার চক্রাবদ্ধ জীবন কাহিনী, এই কবিতার জীবনচক্র, এই কবিতা ।