আমি কোন সুললিত শিল্পের সুদক্ষ শিল্পী ছিলাম না,
আমি ছিলাম না কোন নিপুণ কাব্যের মানবিক কবি
আমি ছিলাম না কোন রূপায়িত জীবনছবির বোদ্ধা
চিত্রকর, আমি ছিলাম তোমাতে নিমজ্জিত প্রেমিক,
আমার ভালোলাগার, আমার সুখ ছবি আঁকার প্রিয়
ক্যানভাস ছিল তোমার ডাগর কাজল চোখ।আমার
ভালোবাসার প্রিয় আশ্রয় ছিল তোমার অবুঝ হৃদয় ।


তুমি জানতে না তুমি আমার কতোটা জুড়ে থাকতে,
তুমি জানতে না তুমি আমাকে কি কি দিতে পারতে।
কখনো সখনো তুমি এ আমাকে দিতে তোমার নিজস্ব
তুমির ছিটেফোঁটা, নিতান্তই অবহেলে,নিজেরই অজান্তে,
খেয়ালের ভুলে, সামান্য চোখের পলক, একটু হাসির
ঝলক,ছুড়ে দেয়া তির্যক কোন কথা,মনের ভুলে গাওয়া
কোন প্রিয় গানের দু কলি, হয়তো তাতে প্রেম ছিল না ।


আমি কোন আলাদা সত্ত্বা হয়তো ছিলাম না তোমার
নিজস্ব ভুবনে । তোমার নিজস্বতায় আমার জন্য ছিল
না ভালোলাগার আলাদা কোন স্থান, তবুও ঘর বাড়ী,
খেত খামার, আকাশ নদী, মেঘ বৃষ্টি, প্রকৃতির মতো
আমি জড়িয়ে ছিলাম তোমার সব কিছুতেই, তবুও এ
অস্তিত্বহীন অস্তিত্ব,এ সামান্য দান,এ সবই যে তখন
এই অবোধ আমার কাছে ছিল অমূল্য সাধনার ধন।    
তোমার এ সামান্য দানেই অনেক সুখী ছিলাম আমি।


এরপর সময়টা বদলে গেলো তার নিজস্ব গতিময়তায়,
বদলে গেলে তুমি,বদলে গেলাম আমি,বদলে গেল সে
প্রেক্ষাপট,আজ আমি জানি প্রেম কাকে বলে,আজ আমি
এক সুনিপুণ হৃদয় শিকারী,আজ তুমি এক মিছরির ছুরি,
ঠোঁটে হাঁসি,মুখে মধু,চোখে লাজ,মনে তবু বিস্তর ফারাক,
তোমার ঠোঁটের হাঁসি হৃদয় ছোয় না, আমার হৃদয় আজ
অল্পে সুখী হয়না,অবুঝ সে প্রেম আজ কামনার বিষে নীল ।
আজ শুধু মনে পরে ফেলে আসা সে স্মৃতিময় দিনের কথা,
সেই আবোধ আমি কি সুখীই না ছিলাম অবুঝ তোমাকে
নিয়ে, আমাদের সেই ভালবাসাহীন, সম্পর্কহীন সম্পর্কে ।
এই বিবর্তনে আমি পরিপূর্ণ হয়েও যে শুন্য হয়ে রইলাম
এই বিবর্তনে আমি সব পেয়েও যে আবার সব হারালাম ।


দৃষ্টি আকর্ষণঃ নিয়মিত কবি তালিকার প্রথমে থাকা নাকি অনেক সুখের, অনেক গৌরবের, অনেকের হিংসার ! আসলেই কি তাই ? কি জানি, নামের কারণে আমি তো কখনো ঐ বর্ণমালা ভিত্তিক কবি তালিকার প্রথমে থাকতে পারিনি, তাই কখনো নেয়া হয়নি ঐ অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতার স্বাদ, সাহিত্যের সেবক হিসেবে, মানুষ হিসেবে মনে হচ্ছে একটি অপূর্ণতা রয়ে গেছে । তাই ইচ্ছে হল একটু পূর্ণ হতে, নতুন একটি অভিজ্ঞতা নিতে, নিজেই একবার যাচাই করে দেখতে, আসলেই এ কতোটা সুখের, কিন্তু সেজন্য তো পৈতৃক নাম বদলাতে পারবো না । তাই বর্ণমালা ভিত্তিক নিয়মিত কবি তালিকার প্রথমে আসার জন্য আপাতত “অকুল পাথার” ছদ্ম নামটি নিলাম । এর অবশ্য আরেকটি গৌণ উদ্দেশ্যও আছে, তা হল এই আগাধ সুখের অভিজ্ঞতা নিয়ে “সুখেনের সুখ” নামে একটি কবিতা লেখার গোপন ইচ্ছে । এই আত্মজ্ঞান লাভের চেষ্টাকে আশা করি মাননীয় অ্যাডমিন ও কবি বন্ধুরা ক্ষমা সুন্দর চোখে দেখবেন । ধন্যবাদ ।


কেউ কেউ কিসের নেশায় এসব করছে তা নিজেই একটু দেখতে ইচ্ছে হল ।আমারটা একটি প্রতিবাদও বটে, তবে ভিন্ন ধারায় । যে লাইনে কেলি হচ্ছে সে লাইনেই প্রতিবাদ করলাম । কিছু কিছু লোকের কাছে গৌণ জিনিসই যে মুখ্য হয়ে উঠে তাদের প্রতি কটাক্ষ হানতেই আমার এই পদক্ষেপ । তবে আমি পৈতৃক নাম বদলাইনি, “অকুল পাথার” ছদ্মনামটি নিলাম, যার অর্থ হচ্ছে সুবিশাল সমুদ্র । নিজেকে যদিও এখনো কবি হিসেবে প্রমাণ করতে পারিনি । তবে এটা জানি কবি ও লেখকদের ছদ্ম নাম নেয়া নতুন কিছু নয়, কবিগুরুর ছদ্মনাম ছিল ভানুসিংহ, আর অনেকেরই অনেক নাম ছিল । আসরের বন্ধুদের জন্য এখানে কিছু প্রতিষ্ঠিত কবি ও লেখকদের ছদ্মনাম দিলাম ।  


কবি ও লেখকদের ছদ্মনামঃ
______________________________
ছদ্ম নাম -প্রকৃত নাম


ভানুসিংহ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কমলাকান্ত-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
অপরাজিতা দেবী-রাধারানী দেবী
কালকূট-সমরেশ বসু
ওমর খৈয়াম-সৈয়দ মুজতবা আলি
কাকাবাবু-প্রভাত কিরণ বসু
কালপেঁচা-বিনয় ঘোষ
জরাসন্ধ-চারুচন্দ্র চক্রবর্তী
ইন্দ্রনাথ মিত্র-ডঃ অরবিন্দ গুহ
যাযাবর-বিনয় মুখোপাধ্যায়
অবধূত-দুলাল মুখোপাধ্যায়
নিরপেক্ষ-অমিতাভ চৌধুরী
নীলকন্ঠ-দীপ্তেন্দ্র সান্যাল
কাফি খাঁ-প্রফুল্ল চন্দ্র লাহিড়ী
বিরূপাক্ষ-বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্র
যুবনাশ্ব-মনীশ ঘটক
নীললোহিত-সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মহাস্থবির-প্রেমাঙ্কুর আতর্থী
বীরবল-প্রমথ চৌধুরী
প্র.না.বি.-প্রমথনাথ বিশী
স্বপনবুড়ো-অখিল নিয়োগী
ধনঞ্জয় বৈরাগী-তরুণ রায়
বেদুইন-দেবেশ রায়
ভীষ্মদেব-দেবব্রত মল্লিক
হুতুম পেঁচা-কালীপ্রসন্ন সিংহ
বিজ্ঞানভিক্ষু-লালিত মুখোপাধ্যায়
টেকচাঁদ ঠাকুর-প্যারীচাঁদ মিত্র
দীপক চৌধুরী-নিহার ঘোষাল
মৌমাছি-বিমল চন্দ্র ঘোষ
চাণক্য সেন-ভবানী সেনগুপ্ত
পরশুরাম-রাজশেখর বসু
শ্রীপান্থ-নিখিল সরকার
বানভট্ট-নীহাররঞ্জন গুপ্ত
ভাস্কর-জ্যোতির্ময় ঘোষ
রূপদর্শী-গৌরকিশোর ঘোষ
সুপান্থ-সুবোধ ঘোষ
বিকর্ণ-নারায়ন সান্যাল
প্রবুদ্ধ-প্রবোধ চন্দ্র বসু
শংকর-মণিশংকর মুখোপাধ্যায়
শ্রীভট্ট-দীনেশ গঙ্গোপাধ্যায়
বনফুল-বলাই চাঁদ মুখোপাধ্যায়
সুনন্দ-নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
অনিলা দেবী-শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
অমিয়া দেবী-অমৃতলাল বন্দোপাধ্যায়
ত্রিলোচন কলমচী-আনন্দ বাগচী
নবকুমার কবিরত্ন-সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
মানিক বন্দোপাধ্যায়-প্রবোধ বন্দোপাধ্যায়
সত্য সুন্দর-মোহিত লাল মজুমদার
পঞ্চানন-ইন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায়
উদয়ভানু-প্রাণতোষ ঘটক
নীহারিকা দেবী-অচিন্তকুমার সেনগুপ্ত
হুতোম পেঁচা-কালি প্রসন্ন সিংহ
দৃষ্টিহীন-মধুসূদন মজুমদার
সত্য সুন্দর দাস-মোহিত লাল মজুমদার
পরশুরাম-রাজশেখর বসু


বিদ্রঃ আমার ২৯-০৯-১৩ ইং তারিখের কবিতার নাম "অকুল পাথার" যা এই মাত্র রচিত হল । বন্ধুদের সবাইকে পড়ার অগ্রিম আমন্ত্রণ রইল । ধন্যবাদ ।