মহাজনের মুখে “চাষার বাচ্চা” গালি শুনে ছেলে
বাড়ী ফিরে মন খারাপ করে বাবার কাছে জানতে
চেয়েছিল, বাপজান, চাষারা কি খুব খারাপ মানুষ ?
চাষা হওয়া কি খুব দোষের কিছু ? নাইলে ঐ পাজী
মহাজনে আমারে “চাষার বাচ্চা” বইল্যা গালি দিলো
ক্যান?ক্যান মহাজনে আমারে সগলের সামনে গালি
দিলো, বাপজান ? ক্যান,বাপজান,গালি দিলো ক্যান?


যে ছোট্ট ছেলেটির মুখে রোজ তিনবেলা ঠিকমত
ভাত তুলে দিতে পারে নাই,আড়ঙ্গের মেলায় ছোট্ট
ছেলের বায়না মিটিয়ে চাবি দেওয়া খেলার কলের
গাড়ি কিনে দিতে পারে নাই, ঈদে নতুন জামা
দিতে পারে নাই, সেদিন সেই জীর্ণশীর্ণ চেহারার
রুগ্ন ছেলেটির অপাপবিদ্ধ মুখের দিকে তাকিয়ে,
তার সরল চোখে চোখ রেখে বুক ফুলিয়ে সত্যি
কথাটাও সে বলতে কিছুতেই পারে নাই,সেদিন
সে জোর গলায় চিৎকার করে বলতে পারে নাই,
নারে বাপধন,না, চাষারা খারাপ মানুষ না, তারা
গ্রাম বাংলার সোঁদা গন্ধ মাটির মানুষ, চাষারা  
ফসলের কারিগর, তারা খাদ্যের শিল্পী। এরপর
তাই চাষা আর চায়নি তার ছেলেও তার মত,
তার মৃত বাবার মত, বা তার মৃত দাদার মত
আর চাষা হোক, আর পুরুষানুক্রমে রক্তচোষা
মহাজনদের গালি খাক, মাটির বুকে সোনালী
ফসল ফলানোর মত,মানুষের মুখে ক্ষুধার অন্ন
তুলে দেবার মত ঘৃণ্য পাপের কাজ আর করুক ।


বিদ্রঃ আজ প্রকাশিত হল পাঁচ পর্ব বিশিষ্ট লেখা “স্বপ্ন চাষাদের জন্য নয়” কবিতার দ্বিতীয় পর্ব । ইচ্ছে বিলাস ও এই সিরিজ পাশাপাশি চলবে। উৎসর্গ গ্রাম বাংলার সব খেটে খাওয়া ফসলের কারিগর চাষি ও আপামর মেহনতি মানুষদের ।      


রচনাকালঃ ০৫-১০-১৩