আত্মবিস্মৃত চাষা আবার দুচোখে মুগ্ধতা নিয়ে
সবুজ ধান খেতের দিকে ফিরে ফিরে তাকায়,
চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজে ছাওয়া,  
এবার গত বারের চেয়ে ধানের ফলন হয়েছে
অনেক ভালো,এই সবুজ ধান একদিন সোনালী
সোনা হয়ে তার গোলায় উঠবে, ধানের মৌ মৌ
গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে উঠবে পুরো গ্রাম, খাবারের
ধান রেখে বাকি বেঁচে পাওয়া টাকায় ছেলেরে চাষা
সত্যি সত্যি গঞ্জের হাইস্কুলে ভর্তি করিয়ে দেবে,
শত কষ্টের ভেতরও স্বপ্নের প্রদীপ সে জ্বেলে রাখবে,
একদিন এই কষ্টের, এই অপমানের শেষ হবে,
সেদিন তার ছেলেও মানুষের মতন মানুষ হবে,
অনেক বড় হবে, তার ছেলেও জজ ব্যরিস্টার হবে ।


সব কষ্ট, যন্ত্রণা, অপমান সে হাঁসি মুখে সয়ে যাবে
ছেলেকে ঘিরে তার সুখী আগামীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে ।
তার লোভী চোখ চকচক করে উঠে, চোখের দৃষ্টি
ঘন স্বপ্নময় হয়ে আসে। বর্তমানের সব কষ্ট, বঞ্চনা,
সব হতাশা, সব না পাওয়া মুহূর্তেই ভুলে যায় সে।        


সাথে সাথে সে এটাও ভুলে যায় যে সারের দাম
বেড়ে গেছে, বীজের দাম বেড়েছে অনেক,এবার
তেমন কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ নাই,তাই বাম্পার
ফলন হয়েছে ধানের, যতদূর চোখ যায় মাঠের
পর মাঠ জুড়ে শুধু ধান আর ধান, বেড়ে যাবে
ধানের ফলন তাই হয়তো কমে যাবে ধানের দাম ।


রচনাকালঃ ০৭-১০-১৩  


বিদ্রঃ আজ প্রকাশিত হল “স্বপ্ন চাষাদের জন্য নয়” কবিতার অষ্টম পর্ব । প্রথমে ইচ্ছে ছিল এই লেখাটি পাঁচ পর্বে শেষ করার কিন্তু ঘটনার আবহ ও পরিপূর্ণতার স্বার্থে সেটা সম্ভব হল না এজন্য সবার কাছে আন্তরিক ভাবে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি । উৎসর্গ গ্রাম বাংলার সব খেটে খাওয়া ফসলের কারিগর চাষি ও আপামর মেহনতি মানুষদের ।