আমি সময়ের চেয়ে বেশী বুড়ো হয়ে যাওয়া আমার
প্রাচীন পিতৃভুমির উদার সবুজ জঠর থেকে বলছি,
এ আমার প্রিয়তম বাবার পদধূলি সিক্ত পবিত্র ভুমি,
এ আমার প্রিয়তম দাদার পদধূলি সিক্ত পবিত্র ভুমি,
এখানে আমার বিগত প্রিয়তম বাবা, তার মৃত বাবা,
তার প্রাচীন বাবা, তারও প্রাচীনতম বাবা,তার বাবার
বাবা এ অনুক্রমিক বংশ পরম্পরার অনিবার্য শেকলে
বিগত কয়েকটি দীর্ঘ শতাব্দীকাল ধরে পুরুষানুক্রমে
জমে রয়েছে আমার উৎস মুলে পৌঁছুতে না পারা প্রিয়
পূর্বপুরুষের নিম্নগামী বংশকাহন,এখানকার লু হাওয়া
আজও প্রকট অস্তিত্বময় হয়ে আছে আমার অদেখা
পূর্বপুরুষদের স্মৃতিকাতর জীবন্ত নিঃশ্বাসে, সেইসব
মানুষদের অতিবাহিত বিগত জীবনের নানা ক্রমিক
ছোটখাট খুনসুটি ঘেরা এ উর্বর ভুমি হয়তো বস্তুবাদী
চোখে আর দশটা পাঁচটা অন্য স্থানের মতো সাধারন
ও হতদরিদ্র, তবুও এ আমার পিতৃভুমি হয়ে আলাদা
সত্ত্বায় ধরা দেয় আমার স্মৃতিকাতর নিমগ্ন চেতনায় ।


এখানকার সাধারন সবুজ শুধু সবুজ হয়েও সহজেই
ছুঁয়ে ফেলে আমার হৃদয়ের নাগরিক ধুলোঢাকা ধুসর
ক্যানভাস, যা নাগরিক বেলাভূমির চোখ জুড়ানো দৃক
সবুজও কখনো পারেনি ছুঁতে, তথাকথিত আধুনিকতা
ও পৌর নাগরিকত্বের দাবীদার এই আমার শুষ্ক বুকের
ভেতরও যে এমন একটি উসর সবুজ প্রস্রবন লুকানো
ছিল, এই পৈতৃক সবুজের এতো কাছাকাছি না এলে
হয়তো সে জানা হতো না কখনোই, নিজের সত্ত্বার এ
সুপ্ত রূপটি হয়তো পুরোপুরি জানাও হতোনা কোনদিন ।
    
এই গ্রামের সহজ সরল মানুষ নামের দু হাত পায়ে চলা
জীবন্ত দুঃখগুলোও খুব সহজে অনাবশ্যক ভাবেই পৌঁছে
যায় আমার হলুদ হৃদয়ের নাগরিক ঘুনে ধরা মনিকোঠায় ।


রচনাকালঃ ১৮-১০-২০১৩