পূর্বসূত্রঃ  


[প্রিন্সেসঃ নতুন আঙ্গিকে চিন্তা ভাবনা, এটা কি তোমার নিজস্ব ধ্যান
          ধারনা নাকি কোন সুত্র থেকে পাওয়া ?
………………………………………………………………...


………………………………………………………………...


প্রিন্সেসঃ কেন, কি হয়েছিল, মার্ক টোয়েন শুনেছিলাম বন্ধুদের
         থেকে বই ধার করে রীতিমত লাইব্রেরি তৈরি করে
         ফেলেছিলেন । তোমার বন্ধুদের ভেতর মার্ক টোয়েন
         নামে কি কেউ ছিল নাকি ? ]


একাদশ পর্বঃ মানব চরিত


আমিঃ মার্ক টোয়েন, তাহলে তো আমার বইগুলো ধন্য হতো,
        আমি নিজেই তো উনার ছোট খাট এক শিস্য ছিলাম ।
        নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গোপন সুত্র থেকে জানতে
       পেরেছিলাম সবাই যার যার পছন্দ মত বই নিয়ে যাবার
       পর বাদ বাকি বইগুলো নাকি আমাদের বাবুর্চি কেজিদরে
       বেচে দিয়েছিল ।
        
প্রিন্সেসঃ আহা, বইয়ের কি ভয়াবহ দুর্গতি, এই বইগুলো কি
        সব তোমার পড়া ছিল ?


আমিঃ বেশীর ভাগ, কিছু নতুন বইও ছিল, যা পড়ার সময়
       করে উঠতে পারিনি। তবে সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যপার
      এই বইয়ের সাথে আমার স্কুল জীবনের লেখা ৮ থেকে
       ১৪ বছর বয়সের প্রায় অর্ধশত কবিতা সহ জীবনের
       প্রথম কবিতার খাতাটিও ছিল ।


প্রিন্সেসঃ স্কুল জীবন থেকেই বুঝি লেখালেখির অভ্যাস ছিল,  
         খুবই দুঃখজনক এবং কষ্টের একটি ঘটনা, প্রথম
         জীবনের প্রথম কবিতা, ওগুলো কি পুনরুদ্ধার করা
         সম্ভব হয়েছিল ?


আমিঃ তা কিছুটা ছিল বৈকি, জীবনের প্রথম কবিতা তো আসলে
        প্রথম প্রেমের মত, কাঁচা মনের শুন্য ঘরে স্থায়ী দাগ ফেলে,  
        একবার হারিয়ে গেলে কি সে আর পুনরুদ্ধার করা যায়,
        সব কি আর মনে থাকে । তাছাড়া ঐ বয়সের অবেগ ও
        চিন্তার সাথে বর্তমানের ফারাক তো আছেই । শুধু “জীবন
        কাহিনী” একটি কবিতা স্মৃতিতে ছিল, ওটা স্মৃতি থেকে
        লিখতে পেরেছি । বাদবাকি গুলো ধোঁয়াশা, আজ আর
        মনে নেই ।


প্রিন্সেসঃ ইস, মানুষের যদি ফটোগ্রাফিক মেমোরি থাকতো তবে
       কত ভালো হত! সব কিছু একবার পড়লেই মনে থাকতো,
       পরীক্ষা আর পড়া নিয়ে এতো ঘাটাঘাটি, এতো খাটাখাটনি
       করতে হতো না ।
      
আমিঃ আমরা আসলে দরকারি জিনিস ভুলে যাই কিন্তু যা মনে
       না থাকলেই ভালো হতো সেরকম অপ্রীতিকর ও দুঃখের
       ঘটনা আমাদের পিছু ছাড়ে না কখনোই ।  
    
প্রিন্সেসঃ ঠিক তাই, অন্তত বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে যা ভুলে যাওয়া
          দরকার, যা ভুলে গেলে ভালো হয় সেসব অনাবশ্যক
         জিনিস ঠিকই মনকে খোচাতে থাকে, রক্তাক্ত করে,অথচ  
        যা মনে রাখা দরকার তা বেমালুম ভুলে বসে থাকি ।


আমিঃ তারপরেরও এই মানব জন্মে এমন অনেক বিষয় আছে
        যা এই ভঙ্গুর দিকগুলোর কষ্ট ভুলিয়ে দেয়, অন্যান্য প্রাণীর
        মত মানুষ কেবল দলগত পরিচয়ে পরিচিত নয়, তার নিজস্বতা
       আছে, সুযোগ আছে নিজের পরিচয় নিজে গড়ে নেবার ।


প্রিন্সেসঃ এই সৃজনশীলতার জন্যই তো মানুষ জীবকুল সেরা ।


আমিঃ কোন কোন অর্থে মানুষ দেবতার চেয়ে বড় মানুষের মত
       প্রতিনিয়ত প্রতিপলে ভাল-মন্দ, পাপ-পুণ্য, শুচি-অসুচির
       পরীক্ষা তাকে দিতে হয় না । তাই মানুষের কোন কিছুই
       সর্বাঙ্গীণ নিখুত নয় । তার নিখুত হয়ে ওঠার যে আজীবন
        চেষ্টা সেটাই আসলে মানবতা । সে ভুল করবে, ভুল থেকে
        শিখবে, নিজের ভুল বুঝে সঠিক পথে ফিরে আসবে। এর
        ভেতর দিয়েই সে উন্নত হবে, মনুষ্যত্বের সাধনায়
      এগিয়ে যাবে ।



বিদ্রঃ সাময়িক বিরতির পর আজ “ফেসবুক আমি এবং একজন প্রিন্সেস আদিয়াত” লেখাটির “একাদশ পর্ব” পোস্ট দিলাম । আগে প্রথম থেকে দশম পর্ব পোস্ট দিয়েছিলাম । যারা ঐ কিস্তি দশটি পড়েননি তাদের অনুরোধ করবো পড়ে নিতে নাহলে পুরোপুরি রস আস্বাদন করতে অসুবিধা হবে। লেখাটা অনেক বড় হবে । লেখার কাজ চলছে । ১০০ পৃষ্ঠা + লেখার ইচ্ছে আছে, মাল, মসলাও রেডি । আপনি ঠিকই শুনেছেন ১০০+ পৃষ্ঠার একটি কবিতা । ভবিষ্যতে হয়তো একটি কবিতা দিয়েই একটি বই হলেও হতে পারে। সেটা নির্ভর করছে আপনাদের ভালো লাগা ও সমর্থনের উপর। কয়েকটি ধাপে বাকি অংশ গুলো আসবে । এটি মূলত ফেসবুক নির্ভর নতুন ঘরানার একটি গদ্য কবিতা । প্রথাগত কবিদের অনেকের কাছেই এটাকে কবিতা ভাবতে কষ্ট হতে পারে । এটা লিখতে গিয়ে আমারও একটি নতুন ধারা বলে মনে হয়েছে । অনেকটা Dialogue বা Conversation ধরনের যার প্লাটফর্ম হচ্ছে ফেসবুক ।  প্রথম দুইটা পর্বে যে গদ্য কবিতার কথা বলেছিলাম এটা সেই পরীক্ষা মূলক গদ্য কবিতা । তাই তালমিল বা ছন্দের ভেতর নয়, কাব্যিকতা খুঁজতে বলবো ভাষার ব্যবহার, উত্তর প্রতি উত্তর ও স্বগতোক্তির ছন্দের ভেতর। কেমন লাগলো জানাতে ভুলবেন না যেন । সাথে থাকুন। ধন্যবাদ ।


রচনাকালঃ ১৮-১০-১৩ ইং                                                                  (চলমান)


দৃষ্টি আকর্ষণঃ আগামী কাল আসছে আমার শততম কবিতা “আমার আমি” সবাইকে পড়ার অগ্রিম আমন্ত্রন রইল ।