আমার কখনো কখনো ইচ্ছে পায় হতে সুদুরের কোন
এক গহীন সবুজ নাম না জানা গাঁয়ের পরিত্যক্ত ডোবা
পুকুরে নির্বিষ ঢোরা সাপের জলকেলির চিত্রল অসুখ ।
আবার কখনো কখনো ইচ্ছে পায় সে পরিত্যক্ত ডোবার
ঘোলা জলের গভীর বুকে শ্বাস নিয়ে মাছের ঝাকে মিশে
গিয়ে হতে মাছের অবাধ ভেসে চলার দলগত অনুভর ।    
ইচ্ছে পায় হতে ডোবার বুকে ভেসে চলা গ্রাম্য হাঁসের
অবাধ সাঁতারে জল ভেঙে জেগে ওঠা মৃদু মন্দ ঢেউ ।  
আবার কখনো কখনো ইচ্ছে পায় হতে মাছ,সাপ,ঢেউ
ও পচা কচুরি পানা সমেত ঐ সমগ্র ডোবা পুকুরটিই ।
ইচ্ছে পায় হতে ঐ ডোবা পুকুরের ধার ঘেঁষে পায়ে হেটে
চলা প্রাচীন মেঠো পথ, সুদুরের ঐ পথ ধরে হেটে চলে
গিয়ে হতে ইচ্ছে পায় পথ পার্শ্বের পর্ণ কুটিরের শুকনো
পাতার শরীর,যে শরীর ঢেকে রাখে কিছু সর্বহারার মুখ,
সেসব মুখ দেখতে মানুষেরই মত কিন্তু কে জানে ওরা
হয়তো মানুষ নয়, মানুষ হয়েও ওরা যে ঠিক বাদবাকি
মানুষের মত নয়, মানুষের মত নয় ওদের জীবনধারন,
মানুষের মত নয় ওদের চলন বলন, নয় আচার বিচার,        
সে পথ ধরে আরও কিছুদুর গিয়ে হতে ইচ্ছে পায় হতে
একপায়ে দাড়িয়ে থাকা বিশাল একাকি তাল গাছের উচু
চূড়ায় বাঁধা বাবুই পাখির বাসার শাশ্বত শৈল্পিক আদল ।
আবার যেতে যেতে ইচ্ছে পায় হতে সে মেঠো পথের কচি
কচি সবুজ ঘাস,গরুতে খেয়েছে যারে,ছাগলে খেয়েছে যারে,
আরও হেটে হেটে গ্রামের শেষ প্রান্তে গিয়ে হতে ইচ্ছে পায়
হতে অবারিত সবুজ প্রকৃতি, মমতাময় সাধারন মানুষের সুখ
দুঃখ, হাসি কান্না ইত্যাদি নানা খুনসুটি সহ সে গোটা গ্রামটিই ।


রচনাকালঃ ১৮–১০-২০১৩ ইং


বিদ্রঃ এটি একটি চলমান কবিতা, আজ পঞ্চম পর্ব প্রকাশিত হল, এই পর্বটি আমার পূর্বপুরুষের গ্রাম ভ্রমনের সময়কার লেখা, “আমি আমার পিতৃভূমি থেকে বলছি”  এবং এই ইচ্ছে বিলাস কবিতার এই পর্বের প্রেক্ষাপট একই । সামনে আরও আসতে থাকবে । প্রথমে ভেবেছিলাম তিন পর্বে শেষ করবো, কিন্তু তিন পর্ব লেখা শেষে দেখলাম অনেক ইচ্ছে বাদ পরে গেছে তাই আপাতত এটি চলমান হিসেবেই থাকলো । পর্ব সংখ্যা নির্ভর করবে ইচ্ছের উপর । প্রতিনিয়ত কত নতুন নতুন ইচ্ছে মনে আসে । স্থান কাল ও পাত্রভেদে বদলে যায় ইচ্ছের বৈচিত্র্য ।