মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান অর্জন হল আত্মজ্ঞান অর্থাৎ নিজেকে জানা, সেটা অর্জন যখন শুরু হয় তখন বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে আমিত্ব নিয়ে আমরা ভুলের দরিয়ায় অহেতুক গর্বের সাম্পান ভাসাই তা সাম্পান নয় নেহায়েত খড়কুটো, এর পরের অধ্যায়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, দুটি পথ খোলা আছে সামনে এই অনুভবে হতাশায় হাল ছেড়ে দিয়ে এটাকে ভাগ্য মেনে নিয়ে সাধারনের কাতারে গড্ডালিকা প্রবাহে মিশে খড়কুটোর মত ভেসে যাওয়া অথবা লব্ধ জীবন ও জগতের বিপুল জ্ঞানের দ্বারা নিজের অপূর্ণতাকে পূর্ণ করা, নিজেকে সমৃদ্ধ করার নিরন্তর সাধনায় মগ্ন হওয়া । প্রথম পথেই বেশীর ভাগ মানুষ ভেসে যায়, দ্বিতীয় পথটি  কঠিন, আজন্ম সাধনার পথ, নিরন্তর সাধনার মাধ্যমেই এই পথের অভিযাত্রীরা নিজেদের সাধারন মানুষের স্তর থেকে ভিন্ন উচ্চতায় নিয়ে যান, এজন্য তারা বরেণ্য, মানুষ হয়েও তারা পূজনীয়, জীবন ও দৃষ্টিভঙ্গীর গভীরতায় নিজের ব্যক্তিগত ও সমকালীন অনুভব যখন বিশ্বজনীন ও কালজয়ী হয়ে ওঠে তখন সেটা কবিতা বা সাহিত্য পদবাচ্য বলে বিবেচিত হয় । অনেকের ভেতর জীবন ও জগতের এই বিপুলতার প্রেক্ষাপটে ব্যক্তিগত অপূর্ণতার অনুভবই নেই, জীবন ও জগতের আয়নায় নিজেকে দেখার চোখই নেই । লেখালেখি অনেক হচ্ছে তার সব কি সাহিত্য পদবাচ্য হচ্ছে, এটি নিয়ে কেউ কেউ আবার হতাশাও প্রকাশ করে থাকেন, কিন্তু আমি সেই দলে নেই, যে অপরিসীম প্রেম ও দরদ নিয়ে মানুষ কবিতা ভালোবেসে লেখার চেষ্টা করছে, তাও ফেলনা নয় । অনেক লেখালেখি হচ্ছে, সব লেখা মানসন্মত হয়তো হচ্ছে না, তাই যে সাধক এ নিয়ে তার বিচলিত হবার কিছু নেই । লেখার মুল বিচারক হল আপামর পাঠক ও মহাকাল, যার যা ওজন সে অবস্থান ও মূল্যায়ন সে পাবে, মহাকালের ঘূর্ণাবর্তে যে মহীরুহ সে নিজের  অবস্থান ধরে রাখবে, যে খরকুটো সে ভেসে যাবে, সাহিত্য এক বিপুল সাধনার কাজ, তাই লেখে অনেকেই কিন্তু সবাই কবি নয়, কেউ কেউ কবি।