সুকন্যাদের কেউ একজন ডাগর কালো নয়ন মেলে
অনুযোগসিক্ত গাঢ় কণ্ঠে বলেছিল নারী সৌন্দর্যমুগ্ধ
হওয়া মানে  দুনিয়ার তাবৎ নারীকে  অবমাননা করা,
নারী হৃদয়ের নিজস্বতা নিয়ে ভাবা মানে দুনিয়ার সমগ্র
নারীকুলের ব্যক্তিগত গোপনীয়তায় অযাচিত হস্তক্ষেপ করা,
নারীদেহের অপার সৌন্দর্য নিয়ে প্রেমকাব্য লেখা মানে  
নাকি দুনিয়ার তাবৎ নারীকুলকে অজ্ঞাতে ধর্ষণ করা,
সেই সুকন্যার কাছে আমারও কিছু প্রশ্ন ছিল সুধোবার,
সব সৌন্দর্যের কেন্দ্রভুমি যে নারীর রুপযৌবন সে তো মুগ্ধ
করে সমগ্র সৃষ্টিকুলকে, তবে পুরুষ কেন দোষী হবে একা ?
পুরুষের অপার ভালোবাসার উৎস বলে খ্যাত যে অনন্ত
নারী হৃদয় তা কি এতোই ঠুনকো যে তাকে নিয়ে ভাবলে,
তাকে নিয়ে লিখলে তার নিজস্ব সত্ত্বার অবমাননা করা হয় ?
অনন্ত সৌন্দর্যের উপমা যে নারীর রুপযৌবন তা কি এতোটাই পলকা
যে শুধু সে সৌন্দর্য মুগ্ধ প্রকাশেই গোটা নারীকুলকে ধর্ষণ করা যায় ?  
প্রকৃতির কোন সৌন্দর্য  তো মলিন হয় না ভালোলাগার মুগ্ধতায়,  
ফুলের ঘ্রান, পাখির কলতান, বৃষ্টির পতন, চাদের জোস্না,
নদীর সাগরে ছুটে চলা তো হয়না পুরনো ভাবনার ছোঁয়ায় ?
বনের সবুজ তো কভু হয়না মলিন ভালোলাগার শিহরণে,  
নারী কি প্রকৃতির তাবৎ সৌন্দর্যের এক বিপুল অনুষঙ্গ নয় ?
তবে কেন এতো স্পর্শকাতর হবে নারীর অনন্ত রুপ যৌবন ?
তবে কেন এতো ঠুনকো হবে পল্লবিত কোমল নারী হৃদয় ?  
তবে কেন এতো নাজুক হবে নারীর কুসুমিত সুগন্ধি শরীর ?    
তারপরেও যদি মেনে নেই তার সব অভিযোগ তাহলে বলতে হয়
যে একজন নারীর সৌন্দর্য মুগ্ধ হয় সে তো এক সামান্য পুরুষমাত্র,
যে একজন নারীকে অবমাননা করে সে তো অভদ্র এক পুরুষমাত্র,
যে একজন নারীকে ধর্ষণ করে সে নিম্ন শ্রেণীর এক ঘৃণিত ধর্ষকমাত্র,
যে পুরুষ পৃথিবীর সমগ্র নারী রূপে মুগ্ধ হবার অসীম ক্ষমতা রাখে,
যে পুরুষ পৃথিবীর সমস্ত নারীকে অবমাননা করার বিপুল ক্ষমতা রাখে,  
যে পুরুষ পৃথিবীর তাবৎ নারীকুলকে ধর্ষণ করার অমিত ক্ষমতা রাখে
সে তো কোন সাধারন পুরুষ নয়,  সে কোন সাধারন পুরুষ হতে পারে না,
সে অসীম ক্ষমতাধর মহাপুরুষ,  কোন সাধারন পুরুষ সামান্যের কখনো
থাকে না পৃথিবীর সমগ্র নারীকে আলোড়িত করার এই প্রভুত ক্ষমতা,
আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই সেই ডাগর নয়ন সুকন্যাকে নিজের
অজ্ঞাতসারে সৌন্দর্যমুগ্ধ এই কবিকে  মহাপুরুষ স্বীকৃতি দেবার জন্য ।