আমার সব কবিতার প্রথম পাঠিকা একজন নীলবসনা মেঘ,
আমার না লেখা কবিতাগুলো সেই প্রথম পড়ে,
কবিতার পাতা উল্টিয়ে উল্টিয়ে সে পড়ে,
শুয়ে শুয়ে বিনুনি দুলিয়ে দুলিয়ে সে পড়ে,
বালিশে মাথা রেখে দেয়ালে পা দিয়ে সে পড়ে,
বুকের উপর কবিতার খাতা রেখে সে পড়ে,
পড়তে পড়তে সে বারবার লুটোপুটি খায়,
হাসতে হাসতে সে অহেতুক গড়াগড়ি যায়,
এভাবে নিয়মিত প্রতিদিন সে রাত্রি দ্বিপ্রহর পর্যন্ত,
চোখ ঘুমে জড়িয়ে না আসা অবধি পড়তেই থাকে,
সে আমার সব না লেখা কবিতার প্রথম পাঠিকা ।


পড়তে পড়তে সে স্বার্থপর ঘুমের দেশে হারিয়ে যায় আমার
না লেখা কবিতার খাতা তার বুকের কোমল বল্কলে চেপে,
তাই আজকাল আমি আর রাতে একবিন্দু ঘুমাতে পারি না,
আমার কলমের গোপন যোনী ফেটে যুবতীর মাসিকের মত
কালচে লাল রক্ত আসে, হয়না কোন প্রিয় কবিতার গর্ভধারন,
তাই বহুকাল ধরে আমি এক নপুংসক নির্বাসিত কবি,
আমার স্বপ্নেও সেই নীল বসনা আজকাল আর আসে না,
আমার পৌরুষ আর পায়না খুঁজে নীল বসনার ভাবনার ভ্রুন,
তাই আমি আজ শীতঘুম কাতর অনুর্বর কবির ফসিল,
কবেকার চলে যাওয়া বিস্মৃত সেই প্রথম প্রেম, প্রথম ভুল,
প্রথম প্রতারণা, প্রথম কষ্ট নিয়ে আর কত কবিতা লেখা যায় ?


তাই আমি আজ আর নতুন কোন কবিতা লিখতে পারিনা,
কবিতারা আমার হৃদয়ের চোরাগলিতে এখন আর আসে না,
কত বসন্ত এসে ফিরে যায় তবু কবিতারা ফিরে আসে না,
তবু অপেক্ষায় থাকি সেই নীল বসনার হেঁয়ালির খেলা শেষের,
তবু অপেক্ষায় থাকি কখন সে আমার কবিতাদের ছুটি দেবে ,
এখন আমার অপেক্ষার কাল, শুধু অপেক্ষা, অনন্ত অম্ল অপেক্ষা ।


রচনাকালঃ ২৪/১২/১২