না লেখা সে গল্পটা নদী নামের কোন এক নারীর
কিম্বা সে নারী নামে কোন এক বহমান নদীর গল্প,
একথা শুনতে পেয়েই বুকের বালতিতে জমে ওঠা
এক হাট প্রশ্ন অকস্মাৎ খলবল করে জেগে উঠল
জিইয়ে রাখা বন্দী কৈ মাছের কালচে ঝাকের মত,  
যাহ, নদী নামে নারীর নামকরণ তো হরহামেশা হয়,  
তাই বলে নারী নামে আবার কোন নদী হয় নাকি ?


নদীর নাম সুরমা হয়, গঙ্গা বা পদ্মা হয়, মেঘনা হয়,
যমুনা হয়, হয় তিতাস, তুরাগ, ধলেশ্বরী বা আত্রাই,  
আবার তিন ভাগ জল আর এক ভাগ স্থলের পৃথিবীতে
নদীর নামকরণ হয় নীল, আমাজান, ইয়াংসি, রাইন,
কঙ্গো, ভলগা, মিসিসিপি, মেকং, সিন্ধু, আমুর, পারানা,
নাইজার, টেমস সহ আরও জানা অজানা কতো নামে ।  


নারী নামে কখনো কোন নদীর নামকরণ করা হয় না,
নদী নামে যুগে যুগে হয় করা কতশত নারীর নামকরণ,
ঘরে হয়, বিদ্যাপিঠ, রাস্তা, শপিংমল, গণিকালয়ে হয়,    
একথা শুনে নারীর চোখের ঝর্ণাধারা বেয়ে এক ফোঁটা
অশ্রু ঝরে দুঃখনদী হয়ে গড়িয়ে গেলো ধরণীর বুক ছুঁয়ে,
সে অশ্রুনদী পেলোনা খুঁজে নীল সাগরের মিলন মোহনা ।      


কি ক্ষতি হতো যদি নারী নামে একটি নদীর নাম হত ?
এ কি তবে পুরুষতান্ত্রিক সমাজের আরেকটি পক্ষপাত ?
এ প্রশ্নের উত্তরের খোঁজে কপোতাক্ষ বয়ে চলে গেলো,
এ অভিযোগের প্রদিবাদে কুশিয়ারা ফুঁসে ওঠে তার দু
কুল উপচে ভাসিয়ে দিলো জনপদ, মাঠঘাট, শস্যক্ষেত,
এ জিজ্ঞাসার জবাবে ব্রহ্মপুত্র সগর্জনে জানালো গতি ও
পথ বদলালেও কোন নদীই কখনো কোন কারনে তার
গন্তব্যের সাগর বদলায় না কোন বেফাঁস নারীর মত,
নদী নিজের সুখে সুখী নয় সে সুখী হয় সাগর সমর্পণে
বলেই কৃষ্ণ সাগর অভিমুখে ছুটে চলে গেলো দানিউব,  
রূপসী ক্যানু ক্রিস্টাল বর্ণীল জলে ঢেউ তুলে বলে দিলো  
উজান ভাঁটির ভাঙা গড়া কোন নদীকে কখনো ফেরাতে
পারে না সাগর থেকে, সাগর মিলন বিনা মরে যায় নদী,
তাই নদীর মত কোন কোন নারীর নামে নদীর নামকরণ
হলেও নারী নামে কখনো কোন নদীর নামকরন হয় না ।