মুখে সস্তার খড়িমাটি মেখে চৌরাস্তার মোড়ে যে মেয়েটি
রোজ নিজেকে নিলামের লালসা মঞ্চে বিকোয় সে স্বৈরিণী,
তাকে চারিত্রিক সনদ দেবার মত তুলাদণ্ড মানুষের নেই,
মুক্তি দেবার মত পথ নেই স্খলিত মেয়েটির পায়ের নীচে,
নিরাপত্তার অবারিত আকাশ নেই নেয়েটির মাথার উপর,
যে ভোগী পুরুষ তাকে পেটের দায়ে সওদার পন্য বানায়
সে সমাজের গম্বুজ হয়ে রয়ে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরেই,
পক্ষপাতের পুরুষ অভিধানে স্বৈরিণীর কোন লিঙ্গান্তর নেই,  
যারা ইতিহাস লেখে তাদেরও থাকে এক একটা ভুভুক্ষ পেট,
গনিকা পতিতা বেশ্যারা পায়না পুরুষবোধক কোন প্রতিশব্দ,
একমুখী ফলা সুতীক্ষ্ণ দাত বসায় শুধু উৎপীড়িতের হাড়ে,    
গনিক পতিত বেশ্যদের থাকে মুখ লুকোবার শামুকখোল ।


রোদহীন আভিজাত্যের অনুদার চাদরে শরীর ঢেকে সস্তার
হৃদয় নিয়ে যে মক্ষীরানি প্রতিরাতে ভোগ অংকশায়িনী হয়,
নিজেকে অকাতরে বিলোয় ভিন্ন ভিন্ন পৌরুষের বাহুডোরে ,
পুরুষ মন যার প্রেমের পবিত্র আলয় নয়, খেলার অনুষঙ্গ,  
সে স্বৈরিণীও পেয়ে যায় শ্রেণীবিভাজনের সুরক্ষা প্রটোকল,
তার বুকের নরম জমিতে পুরুষ নখের ক্ষুধিত আঁচর ঢাকা
পড়ে যায় বিত্তের কারুকার্য শোভিত সামাজিক ব্রেশিয়ারে,  
মনে মনে যে বহুগামী, ভাবনায় যে পতিতা, বেশ্যাবৃত্তি যার
বিলাস বসন, সে নয়, স্বৈরিণী সে ভাগ্য যাকে পথে নামায়,
জীবন তার অসহায় কপালে আঁকে অভিযোগের রক্ততিলক,
সমাজ তার জন্য সঞ্চয় করে রাখে দুঃসহ কলঙ্কের মূলধন,
যে মেয়েটি নষ্ট হয় পৃথিবীর কাছে সেই শুধু পরিত্যাজ্য হয়,
কোন মেয়েই মাতৃ জঠর থেকে স্বৈরিণী হয়ে জন্ম নেয় না,
প্রতারক সময়ের প্রশ্রয়ে তাকে নষ্ট করে সামাজিক অন্ধকার,  
ভাগ্যের ফেরে ভুল জন্মের দায় মেটাতে হয় তাকে আজীবন।