সংজ্ঞা ও সূত্রপাতঃ  


Acrostic বা মুখরা কবিতার সবগুলো পংক্তির  অদ্যাক্ষর মিলে একটি নাম, অর্থবোধক শব্দ বা বাক্য তৈরি হয় । যতদুর জানা যায় Acrostic Poem এর সূত্রপাত হিব্রু ভাষায় । গঠনরীতির অভিনবত্ব ও মৌলিকতার কারনে পরবর্তীতে তা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় ছড়িয়ে পড়ে । মধ্যযুগে ইতালিতে উদ্ভূত ও ষোড়শ শতাব্দীতে টমাস ওয়াট ও স্যার ফিলিপ সিডনির হাত ধরে ইংরেজি সাহিত্যে সুচিত ও বিবর্তিত সনেট গত শতকে যার হাত ধরে চতুর্দশপদী কবিতা নামে বাংলা সাহিত্যে প্রবেশ করে সেই কবি মাইকেল মধুসূদনের হাত ধরেই Acrostic কবিতাও বাংলা ভাষায় প্রবেশ করেছিল । মাইকেলের Acrostic কবিতাটির সবগুলো পংক্তির আদ্যাক্ষর একসাথে মিলে তার এক বন্ধুর নাম হতো ।  


অর্থ ও উদাহরণঃ


অভিধান ডট অর্গ এর সংজ্ঞা অনুসারে Acrostic শব্দের অর্থ হল ।


Acrostic (n.) A composition, usually in verse, in which the first or the last letters of the lines, or certain other letters, taken in order, form a name, word, phrase, or motto.


উদাহরণ সহ Acrostic Poem এর সংজ্ঞা দিতে গিয়ে Poetry Glossary তে বলা হয়ঃ


An acrostic poem is a type of poetry where the first, last or other letters in a line spell out a particular word or phrase. The most common and simple form of an acrostic poem is where the first letters of each line spell out the word or phrase.


Example – An acrostic poem using the beginning of lines


A = Acrostic An acrostic poem
C = Creates a challenge
R = Random words on a theme
O = Or whole sentence that rhyme
S = Select your words carefully
T = To form a word from top to bottom
I = Is the aim of this poetry style
C = Choose a word then go!

Acrostic কবিতার বাংলা নামকরণঃ


Oxford Dictionary অনুযায়ী Acrostic শব্দের অর্থ ‘ছন্দোবদ্ধ ধাঁধা বিশেষ’, এই শব্দগুলো Acrostic কবিতার ঘরানা বা চরিত্র বিশ্লেষণের জন্য যথেষ্ট নয়, অনলাইন বা অফলাইন কোথাও Acrostic কবিতার যথার্থ বাংলা প্রতিশব্দ চোখে পড়েনি । তাই নিজেই খুঁজতে শুরু করলাম কি নাম দেয়া যায়, কাজ চালানোর মত একটি নাম পেয়েও গেলাম “মুখরা কবিতা” ।


“মুখরা কবিতা” কেন এই নাম, এ প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়ঃ  


ক) Acrostic বা মুখরা কবিতায় কবিতার বক্তব্য ছাড়াও সবগুলো লাইনের অদ্যাক্ষর বা মুখশব্দ মিলে  আরেকটি নাম, অর্থবহ শব্দ বা বাক্য হয় যা কবিতার মুল সুরের মতই গুরুত্ববহ, তাই বলা কবিতার প্রতিটি প্রথম বর্ণ এক একটি মুখ যা আরেকটি নাম, অর্থবহ শব্দ বা বাক্য গঠনের হাতিয়ার বলেই এক কবিতার নাম মুখরা কবিতা।
  
খ) মুখরা শব্দটি সাধারণত তেজস্বী রমণীদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় যাদের কথার যশ আছে, এই কবিতাও একই সাথে দুটো ভাব ও ভাবনার ছবি আঁকতে পারে বলে মুখরা রমণীদের মতই বক্তব্যবহুল ।


গ) কবিতার ও কবিতার অদ্যাক্ষরের দুটো আলাদা বক্তব্য এই মুখরা কবিতাকে শাশ্বত রমণীর মত রহস্যময় করে তোলে ।


আমার লেখা Acrostic বা মুখরা কবিতাঃ


Acrostic বা মুখরা কবিতার উদাহরণ হিসাবে বাংলা কবিতায় আমার আজকের কবিতা “কবিতা আসর” এখানে সংযুক্ত করে দিলামঃ


কবিতা আসর


ক = কবি ও কবিতার এক মহামিলন মেলা,  
বি = বিত্তের সুখ নয়, চিত্তে কাব্যের দোলা,
তা = তাথৈ তাথৈ লয়ে কাটে কবিতার বেলা ।


আ = আমি, তুমি ও সে মিলে একাকার আমরা,
স = সবাই মিলে উড়াই কবিতার মুক্তি পায়রা,  
র = রক্তের ধারায় ভেসে চলে কবিতার বজরা ।


( চলমান )