দুঃখ শহরের শেষ পোতাশ্রয়ে আমার নিজের নামে
কিছু অনাবাদী খাস জমির জবরদখল থাকার কথা ছিল,
সে নিষ্ফলা ঘাস জমির পাদদেশে জমে থাকা মেঠো কান্না
লুকাতে সুবিশাল আকাশের নীল ক্ষত ঢেকে রাখার মত
ধুসরতার নাগরিক ছাউনি বোনার অঙ্গীকার ছিল,
সে জমির আপাত নিষ্প্রাণ বুকে সময়ের চিরস্থায়ী কলমে
আমার নিজস্ব জীবনের জমানো গল্প লেখার অভিসন্ধি ছিল,
নিজস্ব নদীর একাকিনী বয়ে চলার জলজ গল্প,
নিজস্ব নারীর সাথে সুখ দুঃখ রমণের দৈনন্দিন গল্প,
অনাগত উত্তর প্রজন্মের জন্য অলৌকিক সুবাতাস
জমা রেখে যাবার পোয়াতি আশাবাদের গল্প ।      


যে শহরের বুক মাড়িয়ে কান্নার নদী নীল অসীমে বয়ে যায়
সেখানে আমার দুদণ্ড পরিচয় রোপণ করার গোপন ইচ্ছে ছিল,
যে সময়ের গতিপথ সদা পরিবর্তনের নিঃস্পৃহ পথ ধরে হাটে  
সেখানে আমার কিছু পাললিক স্বপ্ন বোনার দুঃসাহস ছিল,
মধ্যবিত্ত স্বপ্নের মহীরুহ সময়ের কাঠগড়ায় বড় অসহায়
জেনেও সে শহর অভিমুখী আমার অন্তিম আশারা বড় দুর্বিনীত ছিল,
অন্তিম পরিণতির কথা না ভেবেই আমার কুহুক ইচ্ছেরা
সে শহরের ধুলিস্নানে কয়েক জন্ম কাটিয়ে দেবার পর জানা গেলো
শুধু সাড়ে তিন হাত জমি ছাড়া বাড়তি কোন জমি
কারো নিজস্ব হয়না জেনেও মানুষ তাতে পরিচয়ের মোহর সাটে,
যে নারীকে নিজের অস্তিতের অংশ জেনে গৃহীর শেকড়
সংসারের মাটি আকরে ধরে সে বড় বেশী রং বদলায়,
নিঃস্পৃহ নদী কখনো কোথাও থেমে থাকে না জেনেও
মানুষ নদীর কাছে গন্তব্যের সন্ধান জানতে চায়,  
বাতাসের হাহাকার কখনো কোথাও পৌছায় না জেনেও
মানুষ বাতাসের কাছ থেকে দিক নির্ণয়ের মন্ত্র শেখে ।