একটা বিশেষ শহরের নাম আমি দিয়েছিলাম “পিছুটান”,
না সে নামহীন অনাথ কোন পরিত্যক্ত লোকালয় নয়,
সে আমার আবিষ্কৃত কোন কড়কড়ে নতুন সভ্যতাও নয়,
সে জনাকীর্ণ জনপদের নিজের চালু একটা নামও ছিল,
শহরের এই নতুন করে নামকরণের ইতিহাস অবশ্য
আমি আর সেই শহর ছাড়া আর কেউই জানে না,
কেন এই শহরের নাম "পিছুটান", অন্য কিছু কেন নয়,
অথবা আমি কি অধিকারে এ শহরের নাম দিতে পারি  
সেসব কথা আর কারো জানার কোন প্রয়োজন নেই
এটা আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার, একান্তই ব্যাক্তিগত ।    


আমি একটি প্রমত্তা নদীর নাম দিয়েছিলাম “অনুরণন”
এ নদীটি মানচিত্রের কাগুজে হিসাবে আমার সম্পত্তি নয়,
তার একটি প্রচলিত নাম থাকা সত্ত্বেও তাকে নতুন করে
আরেকটি নাম দেবার অধিকার শুধু একা আমারই আছে,
আর কেউ না জানুক, এই সম্প্রদানের কথা নদীটি ঠিক জানে,
রূপসী নারীর হাসির মত জলে ঢেউ তুলে সে বলেছিল,
আচ্ছা বলত, আমি কি করে জানি যে তুমি আমাকে
এই নামটিই দেবে, অন্য কোন নাম নয়, নয়, নয় ?
আমাকে নদীর এ প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়নি যেভাবে সে জানে
তার নাম অনুরণন সেভাবেই জানে কারণ, জানে সমর্পণের নিয়তি ।


আমি একটি ছিমছাম নারীর নাম দিয়েছিলাম “উপনিবেশ”,
এই নামকরণের গোপন ব্যাকরণ আর কেউ জানে না,
তাহলে হয়তো এ নিয়ে বেঁধে যেত আরেকটি লঙ্কাকাণ্ড,
জন্মসুত্রে বাবা হয়তো মেয়েটির নাম দিয়েছিল “সুকন্যা”
সমুদ্রগামী পুরুষ হয়তো তার নাম দিতে চেয়েছিল “নদী”
প্রেমের কবি হয়তো তার নাম দিতে চেয়েছিল “বিরহ”
পুরুষতান্ত্রিক সমাজ হয়তো তার নাম দিয়েছিল “বিসর্জন”,
এতো কিছু সত্ত্বেও এই মেয়েটির নাম কেন “উপনিবেশ” ?
কেন “সুকন্যা”, “নদী”, “বিরহ” বা “বিসর্জন” সত্যি নয় ?  
সে আরেক ব্যক্তিগত বিস্ময়, উত্তর জানে সাম্রাজ্যবাদী হৃদয় ।