সদ্য ছোড়া লাটিমের ঘূর্ণিতে যে সময়ের গতি
পরিতৃপ্তির সুখ বুনতো সে আমার পাখি ডাকা
শৈশব,
রঙিন ভোকাট্টা ঘুড়ির চোখে চোখ রেখে যে
সময়ে
সহজেই ছুটে যাওয়া যেত চৌরাস্তার শেষ মাথা
অবধি,
ছায়াঢাকা সোনাই ছড়ির সেই কানামাছি
বিকেলগুলো
তেপান্তরের রাজকন্যার ঘুমে অসমাপ্ত রূপকথা
জমা রেখে
যে সময়ে তুমুল মেতে উঠতো দাড়িয়া বান্ধা
মৌতাতে,
সে আমার সময়ের পালা বদলে হারিয়ে ফেলা
শৈশব ।
ভাবনার দৈর্ঘ্য আরেকটু বেড়ে কালো কুচকুচে
মাথা
স্কুলের হাইবেঞ্চের উত্থিত স্পর্ধা ছাড়ালে
মনের কিশলয়ে
উঁকি দিয়ে যেত সদ্য ঘুম ভাঙা এক কিশোরী মুখ,
যার কাজল চোখের উঠোনে আঁকা প্রদোষের সুখ,
যার জন্য বুকের মাঠে খেলে যেত সপ্তবর্ণ বিহাগ,
যার দিগন্ত ছোঁয়া উথাল পাথাল হাসির জলছবি
নদীতে স্রোত হয়ে ভেসে যেত ক্যাকটাসের
দুঃখ,
সে আমার আলোছায়া ঢাকা পিছুডাকা সবুজ
কৈশোর ।
সময়ের ধূলিময় পথ মাড়িয়ে এরপর জীবন হেঁটে
এসেছে আরও বহু পথ, তারুন্য পেরিয়ে যৌবন,
পৃথিবী বারবার খেলেছে দিন বদলের আবহমান
খেলা,
তবু সে ফেলে আসা অবুঝ শৈশব, সে সবুজ কৈশোর
শৈশবের সেই সব গ্লানিহীন বেঁচে থাকার অজর
প্রহর,
কৈশোরের মমতা জড়ানো ফেলে আসা সেই সব
মুখ,
আজও সবুজ প্রকৃতির মত হৃদয়ে জমিনে চির জাগরূক,
সময়ের অমলিন দান সেইসব দলছুটের গোল্লা ছুট ।