এক বিকেলে মন খারাপ ছিল তোর
আমি বারবার জিজ্ঞেস করছিলাম, কি হল রে?
তুই অনেক কষ্টে হেসে বললি, কই! নাতো!
আমি বুঝেছিলাম, হৃদয়ে দহনে জ্বলছিস তুই!
জানিস! তোর পোড়া হৃদয়ের ধোঁয়ায় কাশছিলাম আমিও!


যেদিন রেজাল্ট বেরোলো আমার!
স্বপ্নভঙ্গের যাতনায় নীল হয়ে ছিলাম আমি!
আমার ঘুর্ণয়মান আবেগ রুখে দিলি পরম মমতায়
চোখের জল মুছে টেনে নিলি বুকে!
অথচ আমি ভুলেই গিয়েছিলাম, স্বপ্ন টুটে ছিল তোরও!


চরম অসুস্থতায় বিছানায় কাতরাচ্ছিলাম আমি, যাই যাই অবস্থা!
জগতের সব মায়া ফিকে হয়ে করছিল ওপারের নিমন্ত্রণ!
টলটল নয়নে হাত ধরেছিলি আমার!
কি যে সেবা করেছিলি!


নিরন্তর প্রার্থনায় জয় করেছিলি ঈশ্বর হৃদয়!
তোর অবারিত চোখের জলধারা রুখতে মৃত্যুপথ হতে ফিরিয়ে দিল মহামহিম!
নিভু নিভু প্রদীপের হঠাত জ্বলে উঠায় কেঁপে উঠছিলি তুই!
কিভাবে ভুলি বল তোর অশ্রুঝরা মুখশ্রী!


মনে আছে সেই সন্ধার কথা!
উপোস পেটে রাজপথে ঘুরছিলাম!
উদাস নয়ন চিড়ে প্রকটিত হল যন্ত্র দানব!
মুহূর্তেই বিচ্ছিন্ন হল আমাদের বন্ধন!
আবারও জীবন দিয়ে বিদায় নিলি তুই!
নিজেকে উৎসর্গ করে রেখে গেলি আমায়!


কেন এমন করলি? কেন?
পাহাড়সম ঋণের পাথর চাপায় আছড়ে গেলি!
জানিস! কি যন্ত্রণা, কি অপরাধবোধ!
দীর্ঘশ্বাসের সমুদ্রে সাঁতরাতে সাঁতরাতে ক্লান্ত আমি রে!
স্মৃতির মুচড়ে যাওয়া পাতাগুলো স্ব-যত্নে বাঁধিয়ে রেখেছি হৃদয়ের চিলেকোঠায়!


তুই আমার বন্ধু ছিলি!
প্রশান্তির চাদর ছিলি, ছিলি ভরসার প্রতীক!
জানিস! এই নিষ্ঠুর পৃথিবীর কলহমুখর সমাজে খুবই নিঃসঙ্গ আমি!
সবাই বলে, তুই নাকি আকাশে! এমন এক ভুবনে, যেখান থেকে ফিরেনা কোন আপনজন!


আমি হাসি! খুব হাসি!
ওরাতো জানেনা, তুই থাকিস আমার বুকে!
আমার হৃদয়ে তোর সাজানো ঘর!
আমরা জোছনা মাখি প্রতি চাঁদেরকণায়!...