চুষে নিই সব কষ্টের দাগ, ওষ্ঠ বাড়াও, আরও কাছে আসো,
ধীরে, কোমল হ’য়ে রক্ত আর হৃদপিণ্ডে কেঁপে কেঁপে, রক্তনদী
ব’য়ে দিই তোমার ওষ্ঠে; সবুজ ঘাস আর নরম সমুদ্রের বাতাসে;
আমার গভীর হৃদয়ে স্নিগ্ধ নিঝুম শাল বনে, বেদনার সব মেঘ
উ’ড়ে যাবে কণ্ঠ আর নীল ঠোঁটে। শ্রাবণ সন্ধ্যায় ব’য়ে যাবে করুণ
অশ্রুমালা আমার দিকে দিকে। নরম সুর রচিত আকুল কণ্ঠে;
দাও সুখ আমার অমল পাপড়িতে সাদা মেঘে, শিল্পের গভীরে, চিত্তে।
ঠাণ্ডা হ’য়ে আসে আমার নরম শরীর রাজহাঁসের পালকে, স্পর্শে
হৃদয়ের সব আবেদন নিভে যাবে রাত্রির স্থলনের রক্তিম আভাসে;
তোমার কণ্ঠস্বর, কম্পিত ছোঁয়া, ঝো’রে পড়া মেঘমালার সুখ, অন্ধ,  
হিম গলিত জ্যোৎস্না, প্রবাহিত ঢেউ, থর থর কৃষ্ণচূড়া, গাঢ় সুখ
সব-ই আমার। স্বপ্ন, কল্পনা, সৌন্দর্য গ’লে পড়া রক্তকরবী, প্রবল
উচ্ছ্বাসময় রুপালী ছোঁয়া আজ সব এক হ’য়ে যাবে তোমার ছোঁয়ায়;  
নিবিড় স্পর্শে, জেগে উঠা শরীরের তীব্র সুখ আজ শিশিরের ভোর।
প্রতিভার সব চিহ্ন রেখে যাবো তোমার বুকে আর হৃদয়ের মৌনে,
বিদ্যুতের অন্ধকার ভেদ ক’রে তোমার শরীর আজ উজ্জ্বল আভা,
চৈত্রের প্রকৃতির সৌন্দর্য আজ ম্লান, তোমার স্তব্ধ বুজে আসা শান্ত
চোখে। বিলীন হ’বে পদ্মার প্রবাহিত ঢেউ তার আলোর সন্ধানে,
গভীর জ্ঞান, উপলব্ধি, বিশ্বাস, মানবিক মূল্যবোধ সব মৃত তোমার
কোমল বুকে। আমি ছুঁয়ে যাই কূল থেকে অকূলের দিকে স্নিগ্ধ বিষে।
ছিঁড়ে ফেলি অতীতের সব অস্পষ্ট মুখ, যারা হারিয়ে গেছে অন্ধকারে।  
আমার স্বপ্ন আজ নীল সবুজের জলে, অন্ধকার, স্থির, শান্ত আর স্তব্ধ।  
চ’লে গেছে তাঁরা, যারা এ শূন্য হৃদয়ে আগুনের উত্তাপ প্রান্তরে ভেঙে
চূড়ে উড়িয়েছে রঙিন প্রজাপতি। সব সুর আজ মিশেছে দ্বীপ থেকে
সমুদ্রে; গভীর শব্দ নীরব হ’য়ে আসে আমার একান্ত শূন্য নির্জনতায়,  
কৃষ্ণচূড়ার সব রঙ ফ্যাকাসে হ’য়ে উ’ঠে আকাঙ্ক্ষার নিঃশব্দ হৃদয়ের
গভীরে, শিশিরের প’ড়ে। আমার সকল গান তোমাকে লক্ষ্য ক’রে
রচিত বাণী; হলুদ পাতা, শিশির, গ’লে যাওয়া চাঁদ আর বুকের উত্তাপ
সব-ই অর্থহীন, যন্ত্রণার বিষ তাকেও চুষে নেয় মেঘের হিমেল ঠোঁটে।    
কেঁপে উ’ঠে বেদনার উল্লাসে মনের ব্যাথায়, আমার নিশ্চুপ শরীরে।