জীবন যুদ্ধে পরাজিত, আমি এক বিধ্বস্ত সৈনিক।
যার বাঁচার অধিকারটুকু নিয়েছে কেড়ে, ঘসেটি বেগম আর মীর জাফরের উত্তরসূরিরা।
বাতিঘরের বাতির খোঁজ না পাওয়া, আমি এক জীবন সাগরের দিকভ্রান্ত নাবিক। যে এক ফোঁটা আলোর আশায় উত্তাল সাগরে, ঘুরপাক খাচ্ছি হয়ে দিশেহারা।
অস্থিচর্মসার আমি এক ভিখারী, যার জীবনের সকল চাওয়া পাওয়ার কেন্দ্রবিন্দু ঐ থালাখানা, শুধুমাত্র একমুঠো ভাতের জন্য শক্ত করে হাতে ধরা।
গরীবের ঘরে জন্মানো, আমি কিশোরী ফুলি, মুখবুজে পেটে ভাতে পড়ে আছি বিত্তবানদের ঘরে। কেবলমাত্র বেঁচে থাকার তাগিদে, আজ আমি কৈশোর হারা।
কিছু মুখোশধারী ভালো মানুষের ছায়াতলে থাকা, আমি কন্যা, জায়া, জননী। যাদের কুৎসিত লালসার শিকার হয়ে আজ আমি সম্ভ্রমহারা।
আমি যৌতুকের বলিতে জীবন প্রদীপ নিভে যাওয়া এক অসহায় বোন। যার হাতের মেহেদী মুছে যাওয়ার
আগেই হয়েছি দুনিয়াছাড়া।
আমি কাঁদতে কাঁদতে অন্ধ হওয়া এক বৃদ্ধা মা, যার একমাত্র বুকের মানিক কে কোল থেকে কেড়ে নিয়ে, শেষ করে দিয়েছে ঐ নিষ্ঠুর সন্ত্রাসীরা।


আমি পৃথিবীর আনাচে কানাচে প্রতিধ্বনিত হওয়া হাহাকার।
আমি বাতাসের কণায় কণায় মিশে যাওয়া মর্মস্পর্শী
আর্তনাদ।
আমি প্রতিটি বৃষ্টির ফোঁটায় অবিরত ঝরে যাওয়া,নোনা
চোখের জল।
আমি দুঃখীর ঘরের অন্তহীন দাবানলে পুড়ে খাক হওয়া
কাঠ কয়লা।
আমি কথিত সভ্য সমাজের সবকিছুতে একাকার হয়ে মিশে যাওয়া এক দীর্ঘশ্বাস।
আমার নেই কোনো ধর্ম, বর্ণ,জাত,কাল ও লিঙ্গ। আমার পরিচয় কেবল আমিই। আমাকে তোমরা মুক্তি দাও, আর না হয় ফিরিয়ে দাও আমার সবকিছু, যা তোমরা নিয়েছো কেড়ে।