আমি চোখ বুজলেই
দেখি, ছিন্নভিন্ন লাশ শুয়ে আছে
রাস্তার পাশে,
শুকনো কতগুলো কুকুরের অস্থির মহড়া।


দেখি, কতগুলো কুচকুচে কালো কাক
ছুঁড়েফেলা ভাত নিয়ে কাড়াকাড়ি করে
আর কিছু চিল আকাশে উড়ে বেড়ায় বুভূক্ষু চোখে
বাতাসে ভাসে হাহাকার।


রাত্রে ঘুরের ঘোরে দেখি
লোকালয়ে মজুদ গোলাবারুদের বিস্ফোরণ
অক্ষম নরনারীদের ঊন্মত্ত ছোটাছুটি
জীবিতের অস্থির নিঃশ্বাস।


দেখি, মধ্যরাতে খোলা আকাশের নিচে
বিবস্ত্র নারী, নিসঙ্গ।
শরীরের আবরন নিয়ে যুদ্ধ করে
শুয়োর আর শকুনের দল,
চারিদিকে শ্বাপদের হুংকার।
বুকে তার লজ্জা
আর চেতনায় শত জন্মের অভিশাপ।


দেখি, শহরের অল্প বয়স্কা পতিতা
অশ্লীল ভঙিমায় ডাকে
শরীর দেখায়, গালি দেয় পূর্বপুরুষদের।


আমি চোখ বুঝলেই
দেখি, এক পাগল ক্ষেঁপে ছুটে আসে
মানুষ দেখলে
মাথায় লম্বা উষ্ক শুষ্ক চুল
ছেড়া পোশাক শরীরে
গায়ে বিভৎস গন্ধ।


আজ আমি পরিচিত শহর
রাজনীতি অর্থনীতি সস্তামদ নারী সব ছেড়ে
অচেনা জনপদে জীবন কাটাই।
দেখি, ঘাস ফড়িং এর রঙীন দিন
দিঘীতে শাপলার উজ্জ্বল হাসি
বকুল গাছে পাখির সমাবেশ
কোমল কন্ঠে কৈশরের কলতান।


মানচিত্রের শরীর বাঁচাতে
একদিন খুনি হয়েছিলাম
সেই পাপে আজ এই অজ্ঞাতবাস।


রাত্রে ঘুমের ঘোরে দেখি
মানচিত্রের বুকে উঁই পোকার আবাস
ক্ষত চিহ্নে প্রদাহ।


দেখি, ভোরবেলা পত্রিকায়
সারাদেশ জুড়ে
ষাঁড় আর মহিষের তান্ডব,
এক বাংলাদেশীর শান্তিতে নোবেল জয়,
সব গনমাধ্যমে শোরগোল
খুন হয়েছে তসলিমা নাসরিন
পোষ্টমর্টেমে যাচ্ছে লাশ।


০২.১২.০৬