ছুটির দিনে আমার হাতে কোন কাজ থাকে না । শহরে যে গোরুগুলো
প্রতিদিন বেচাল ঘুরে ঘুরে , রাস্তার ধারে ফেলে দেওয়া শাকসব্জির পচা
অবশিষ্টাংশ খুঁজে বেড়ায় , তেমন । ট্রাফিক পুলিশ খৈনি টিপে টিপে মোটা
গোঁফের নিচে গুঁজে দিয়ে নির্বিকার , যেন মোটর গাড়িগুলো নিজেরাই গোরু
তাড়িয়ে নিশানা খুঁজে নেবে । এমন দিনে আকাট ভাবনাগুলো কেঁচোর মত
কিলবিল করে ওঠে । ভাবি , এই যে পথ , এই কি সেই পথ । কত কাল
আগে এ দেশের রাজা  বাঘ শিকার করার পর এই পথেই অস্টিন হাঁকিয়ে
গেছেন । পথচারী মানুষজন সরে দাঁড়িয়েছে সম্ভ্রমে বা ভয়ে । রাস্তা তখন
মোরামে লাল । পেছনের বাতাস লাল হয়ে গেছে । রাজা হয়তো বুঝতে
পারেন নি । আমার পিতৃদেব রাজা ছিলেন না । ছিলেন দিন আনি দিন
খাই খাই মানুষ । খুঁজলে তাঁর পায়ের ধুলো কি পাবো এখানে ? আজ যেমন
আমি হাঁটছি সেই এক পথে । এখন আর সে লাল নয় । পাথরে পিচে
কালো হয়ে গেছে দৃশ্য । তপ্ত দুপুর এখানে মরিচীকা তৈরি করে দেখেছি ।
এখানে ধুলোই নেই । সব চাকায় চাকায় উড়ে লাগছে গোরুগুলোর গায়ে ,
ট্রাফিক স্ট্যান্ডে অসহায় দাঁড়ানো পুলিশের গোঁফে ঢুকছে , কিছু পথচলতি
মানুষজনের শ্বাসনালীতে । আমার উত্তরপুরুষ কি আমারই মত বাপ-দাদের
পায়ের ধুলো এই রাস্তাতেই খুঁজবে ! দম বন্ধ হয়ে আসে । একা একা হাঁটি
আর ভাবি । এসব প্রলাপ কহতব্য নয় । যদি সব পাগল ভেবে বসে আমায় !