বছরভর যেদিকে ঘুরে বেড়িয়েছি
এখন আর সেদিকে আসাই হয় না
দেখা হয় না সেই রাস্তার পাশের বাগান,
ছোট্ট চায়ের দোকান, এখন আর বসা হয় না ঐ বটগাছের নিচেকার বাঁশের আওটালে,
সামনে দিয়েই যেত গরুর গাড়ি,
সপ্তাজুড়ে দেখা যেত কুটুমের আগমনী গান।
পাশেই ছিল ভাপাঁ পিঠার দোকান,
বন্ধুদের সাথে চুটিয়ে আড্ডাবাজি দিনভর
সিগারেটের ধোয়ার সাথে চায়ের ধোয়ার
সে এক অপূর্বদৃষ্ট প্রেম
দুটোই মিলেমিশে একাকার হয়ে উঠত ধোঁয়াকুন্ড।
একটা বিশেষ সময় অপেক্ষার সময়ে পরিণত হত, সেই সময়টাতে অপেক্ষা করতাম সেখানে।
সে হেঁটে যেত, আমি চেয়ে থাকতাম
সে চলে যেত, আমি চেয়েই থাকতাম
সে হয়ত আমায় দেখেনি কখনওই!
আমারও এখন আর চেয়ে থাকা হয় না!


আজ কতদিন পর আবার সেই রাস্তাটিতে
চেয়ে দেখো, সবকিছু আগের জায়গাতেই আছে
আধুনিক রূপে বদলে গেছে সবকিছু
রাস্তার পাশের সেই ফুল বাগানটি আর নেই, এখন আর ফুল ফোটে না,
সেখানেই নির্মিত হয়েছে সুউচ্চ আবাসিক দালান,
শীতাতপনিয়ন্ত্রিত আবাসিকের মনোরম ঘরগুলোতে ফুল ফোটে না ঠিকই, কিন্তু ফুল ঝরে যায়, নারী ফুল;
ভ্রমরেরা আসে ফুলের প্রেমে মত্ত হতে, মধু নিয়ে চলে যায়, এটা প্রেম নয়, এটা মোহ, এটা হয়ত আসক্তি!
কত ফুল ঝরে গেল তা দেখার মালীও আজ নেই! ফুলগুলি ঝরে যায়, অকাতরে ঝরে যায়।


অবলা পশুর নির্যাতন বন্ধ হয়েছে সেই কবে
এখন যন্ত্রচালিত দ্রুতযানগুলো হিহি করে ছুটে যায় প্রতিদিন, প্রতিরাত।
গাড়িগুলো চলে যায় ক্রোশের পর ক্রোশ


রাস্তাটার বুকে আজ পিচের প্রলেপ লেগেছে
পাথর বালু পানি মাটি আরও কতকিছুর রসায়ন যুক্ত হয়েছে
রাস্তার বুক চিরে ফালা ফালা করেছে
রাস্তাটা নিশ্চয়ই খুব আহত হয়েছিল!
রাস্তাটার অনেক কষ্ট, অনেক কষ্ট
মিশমিশে কালো রংয়ের কষ্ট বুকে জমাটবদ্ধ
বড়বড় গাড়িগুলোর ঘাড়ের বোঝার চাপে রাস্তাটার করুন দশা!
তবুও কি নির্দ্বিধায় বয়ে চলেছে রাস্তাটা
নির্বিঘ্নে ছুটে চলেছে সবই ওর বুক দিয়ে
এখনো আগের গন্তব্যেই পৌঁছায় প্রতিদিন
ঠিক যেভাবে বয়ে চলেছি আমি, তুমি, সে