জাগতিক রাক্ষসপুরী হতে নাতিদূরত্বে অবস্থিত চাকচিক্যময়, মনোহরা, প্রিয়দর্শিনী এই নগরীর নাম হাতিবান্ধা;
বাস্তবতার নিরীখে কল্পিত এক ভুল নগরী।
এর নির্দিষ্ট কোন মহাদেশ, জেলা বা উপজেলা নেই!


তার বাপ, মা, ভাই, বোন কিংবা আত্মীয়স্বজন?


পূর্বে ছিলেন বটে, তবে এখন আর কেউ নেই!
হঠাৎই সদলবলে কোথাও মিলিয়ে গেছেন!
কোথায় মিলিয়েছেন? তা অনাবিষ্কৃত,
ইতিহাসবেত্তাগণের মতে: "যেইদিন হতে বিশালদেহী এই নগরীর দখল নিয়েছেন ইহলোকের অপরাজেয় মহাবীর রাক্ষসরাজ, সেইদিন হতে তাদের আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় নি!"
রাক্ষসবংশের সুনিপুণ কারিগরি দক্ষতা, দূরদর্শী নেতৃত্বে তিলেতিলে গড়ে উঠেছে এই তিলোত্তমা নগরী।  


চোখ ধাঁধানো রাক্ষসপুরীর অন্ধকার বন্দিশালায় হাতিবান্ধার বয়স একবিংশ শতাব্দীকাল পূর্ণ হতে চলেছে।
সিংহাসনচ্যুত হাতিবান্ধার দুটো হাত বেঁধে, পায়ে শেকল পরানো হয়।
মুখ হতে উপড়ে ফেলা দাত, নখাগ্র আর কেটে নেয়া জিহ্বামূল; - গোগ্রাসী রাক্ষসরাজ এবং তার বংশধরেরা মহা উল্লাসে হজম করেছেন বহু আগেই!


কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট দৈন্যদশায় নির্যাতিত, নিপীড়িত হাতিবান্ধার কোন যোগ্য উত্তরসূরি আজও বেঁচে আছেন কিনা?
তা সঠিক জানা যায়নি!
তবে শোনা যায়, হাতিবান্ধা বংশধারার অনেকেই রাক্ষসবিবাহ করে মহাশক্তিধর রাক্ষসরাজের কৃপাদৃষ্টি অর্জন করেছেন এবং বহাল তবিয়তে ক্ষমতাসীন রাক্ষসবংশেই ঘরকন্না চালিয়ে যাচ্ছেন।


শত অন্যায়, নির্যাতন, নিপীড়ন সহ্য করে
তিলোত্তমার গর্ভজ বন্দিশালার অন্ধকূপে কোনরকমে বেঁচে আছেন অসহায় হাতিবান্ধা।
যদিবা তার হাত, পা আর কণ্ঠপথ অবরুদ্ধ;
তথাপি তার অন্তর এবং দৃষ্টিপথ সুদূরপ্রসারী।
এ দুটির দখল কেউই নিতে পারেন নি কখনো!
নিজের এহেন অক্ষমতাবশত -
সে কখনোই প্রতিবাদ করে নি, করতে পারে নি।


তবুও-
মুক্তির স্বপ্ন দেখে হাতিবান্ধা
হ্যাঁ, তবুও স্বপ্ন দেখে- নিশ্চয়ই কোন একদিন;
এই চাকচিক্যময় অন্ধকার কারাগারের বন্দিদশা হতে মুক্ত করতে পবিত্র আলোর মশালবাহী, দুর্দান্ত দাপুটে, দিগ্বিজয়কারী, ত্রাণকর্তা আসবেন; তিনি আসবেন, অবশ্যই আসবেন, তাকে যে আসতেই হবে !
অসহায় হাতিবান্ধা;
বিশ্বাসের আঁকড়ে ডুবে থাকে সারাক্ষণ,
আর মনেপ্রাণে সেইদিনের স্বপ্ন দেখে!
যেইদিন খুব বেশী দূরে নয়....।।


০২:২৮/২১-০৭-২০১৮ খ্রিস্টাব্দ।