তখন বয়স সাড়ে সাত অথবা আট;
বাবার নিঃশ্বাস টিকে থাকার অক্সিজেন আমি,
মা নেই;
শুনেছি আমার চোখ খুলতেই মায়ের চোখ নিভে গেছে,
মৃত্যু সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার কারিগর ।
রাতের বয়স বাড়লেই বাবার চোখে অশ্রুরা পরিচিত হতে আসে;
আমি ঘুমের ভানে বাবার কপালে হাত স্পর্শ করি,
বাবার কান্নার শব্দ লুকাতে থাকে;
বাবা ঘুমিয়ে পড়ে,
আমি কাঁদতে শুরু করি মায়ের বালিশে হাত বুলিয়ে!
এক সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি বাবাও পাশে নেই;
দুপুর শেষ হয়ে সন্ধ্যা নেমে আসে,
বাবা আর ফিরে আসে না!
আমি মানুষের মুখ থেকে শুনতে পাই-
"এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।"
তারপর একদিন স্বাধীনতা আসে,
শুধু বাবা ফিরে আসে না!
এভাবে একাত্তর চলে যায় তারপর বিদায় হয় একাশি,
একানব্বই, দুই'হাজার এক অতীত হয়ে যায়;
বাবা আর ফিরে আসে না ।
শুধু বাবার পরিচয়টুকু ফিরে আসে; মুক্তিযোদ্ধা ।
এখন আমাকে কেউ বাবার নাম জিজ্ঞেস করলে আমি উত্তরে বলি-
"বাবার নাম : মুক্তিযোদ্ধা।"