ভালোবাসার সিন্ধু-সভ্যতায় স্মৃতির মহেঞ্জোদারো।
একাকী জীবনের কক্ষপথে আলটপকা প্রেমের উল্কাপতন।'
প্রেম একবারই এসেছিল নিরবে' মন-বাগিচায়।
ডেকে উঠেছিল বসন্তের কোকিল হৃদয়-কৃষ্ণচূড়ার ডালে ডালে।
মন-ফসকে কখন যে পড়ে গিয়েছিল ভালোবাসার শূন্য টুকনিটা!
কেউ বুঝি আসবে,ভালোবাসবে?
না আবেগী আকাশকুসুম বদ্ধমূল কুসংস্কার নয়।
দেউলে হৃদয়ের অন্তঃপুর ঝলমলিয়ে একদিন সত্যি এসেছিল মনের ইষ্টিকুটুম।
প্রেমানুভবের মাত্রাহীন বর্ণমালায় এক-মন স্বপ্নের বরণডালা সাজিয়ে বরণ করেছিলাম তাকে হৃদয়ের প্রাসাদে।
লেবুলঙ্কার মতো ভালোবাসার রাখীতে সুরক্ষিত ভেবেছিলাম সম্পর্কের দোরগোড়াটা!
কোনো এক শীতার্ত গোধূলিতে প্রেমার্ত ছোঁয়ায় বলেছিলাম,'ভালোবাসি,ভালোবাসি'।
ভালোবাসার সীলমোহর দিয়ে, জীবনে শুনিয়েছিল আশাবাণী -"ওই শোনো টিকটিকি ঠিক ঠিকই বলছে।”
তার ভালোবাসার ওমে ছিলো সলজ্জ প্রেমের উষ্ণতা।
তিরবেগে সাঁতার কাটতাম তার অভিমানী রাগানুরাগের পুষ্করিণীতে।
অদৃষ্টের পরিহাস !
ছুটন্ত প্রেম একদিন হোঁচট খায় সন্দিহান মন-রাহুর বক্রদৃষ্টিতে।
অমঙ্গল, ঘোর অমঙ্গল!
সম্পর্কের তিন-রাস্তার মোড়ে ভালোবাসার রাজপথ কাটে অবিশ্বাসের কালো বিড়াল ।
কণ্টকাকীর্ণ সম্পর্কের ছেঁড়া তারে থমকে যায় সময়;
নিরাশার পাখি দুহাত বাড়ায় নৈঃশব্দ্যের পাখিরালয়ে।


সন্ধ্যা নেমে আসে।
স্বপ্নহারা সায়াহ্নে দর্দুরের মকমকী ডাক;
ছেঁড়া সুখের ঘনাগমে বেদনার আসার;
টুপটাপ্; টুপটাপ্ ...
টাপুর টুপুর টাপুর টুপুর ছন্দে  অন্তর্দহনের জলতরঙ্গে অবগাহিত মন গায়-'তুই ফেলে এসেছিস কারে, মন, মনরে আমার'।
মনভাঙা আয়নায় নগ্ন-প্রেমের কুৎসিত চেহারা।
শুশ্রূষাহীন ক্ষতগুলোয় চাই আস্ত একটা  বিশল্যকরণী, জড়িবুটি।
ওই যে বাজে মন্দিরের ঘণ্টা;
তারই গগনকম্পিত অনুরণনে আবারো শুনি জীবনদায়ী আশাবাণী-'সে আসবে,ভালোবাসবে'।
কি জানি- এসব  অন্তঃসারশূন্য ভ্রম কিনা?
একাকীত্বের 'শ্রাবণ-বরিষণে' ভালোবাসা হাতড়ায় স্বপ্ন-সুখের রোদ্দুর।
ওই বুঝি লাগলো শৃগালের পরিণয়!
ধ্যাৎ্! ব্যর্থ প্রেমের আবর্জনা, অন্ধ কুসংস্কার যত!
সর্বনাশা দুর্ভাগ্যের আশ্বিনে বৈধব্য মন খোঁজে তাকে সর্বক্ষণ;
বিধিলিপি ভবিতব্য কি কে তা জানে!
তবুও সম্পর্ক-রাখীর অঙ্গীকারে, এ ভালোবাসাহীন সংসারে মেনে চলেছি ভালোবাসারই সংস্কার।  
সে যে আমার প্রথম প্রেম, হয়তোবা শেষও।