সমগ্র সিলিঙ জুড়ে অথৈ আকাশ
চাঁদটাকে পুড়তে দেখি সমস্ত নির্জন রাত,
জীবনের রাজপথে বিক্ষোভ, মিছিল, ত্রাস
জুয়াড়ির শেষ দানে অচল কোনো তাস।


জীবনকে রেখেছি কোলাহলের বিপরীতে
অজ্ঞাতেই যদি ভালো থাকা যায়!
অজ্ঞাতসার অস্থি নিমজ্জিত হৃদয়ের আন্দোলন -
রেহাই কিংবা সুরাহা হয়নি কোনো হাতে।


ইচ্ছেগুলো বেখেয়ালে পুড়তে থাকে, মনসার বেদিতে দীপ জ্বালি,
পেঁচিয়ে যায় নিঃসংশয়ে শত অজস্র পদ্মগোখরা, যেনো এই দেহে কোনো অনুভূতি বাকি নাই!
কঙ্কালের চিৎকার সামর্থ্য দেয়নি বিধাতা কোনো কালেই।


ভাবিনি বর্ষা পূর্ণতা পাবে চোখে,
অন্ধকারে ছোঁয় না সমীরণ, চারদেয়ালের সমুদ্রে উথালপাতাল ঢেউ।
এখানে সমস্তই অভাব অনটন, টানাপোড়েন -
বিষাদ গিলেছে চাঁদ, তারাদের আকাশে ছুটি।


ফেলে আসা দিবস রজনী, পুরোটাই ক্ষয়ে যায়, পুড়ে গলে যায়
প্রিয় ডাকনাম, পোষ্ট বক্সের না খোলা চিঠি, অচল রথের মতোই দীর্ঘশ্বাস লুকায় শেষ বিকেলের আলোয়।


পথ এসে থেমে যায় পায়ে, ধুলো মাখা পথের বাঁকে ফেলে আসা শৈশব পড়ে থাকে,
যৌবনের জৌলুশে দিশা হারানো নাবিকের মতো পরিণীতার প্রতীক্ষায়, সমস্ত নিকোটিন মস্তিষ্কে -
মন খারাপের সমস্ত রাত্রি কাটে নিঃসঙ্গতার উপঠৌকনে।


প্রার্থনা আর কামনায় সমস্ত পাওনাই বাকি, যা কিছু জুটেছে সবটাই পাপের ঝুলি,
জীবনের হিসাবে যোগ বিয়োগের খেলায়, কিছু দুঃখ প্রতিবার একই নিয়ম - চক্রবৃদ্ধি,
জীবন যেখানে প্রায়শ্চিত্ত, মৃত্যু সেখানে সুখের নির্বাসন - যেনো এই নিয়তি।


অথৈ সমুদ্রেও তৃষ্ণা জাগে, এক ফোটা জল নাই তৃষ্ণাতুর হাতে,
হাতগুলো সব গেলো কোথায়? তাদেরও বুঝি ভীষণ পোড়ায়?
বরষা নামে দেয়াল জুড়ে, জলগুলো সব দেয়াল বেয়ে চুইয়ে পড়ে,
জলগুলো সব শুকিয়ে গেছে, এই বরষার একলা চোখে।


ভাবিনি রঙ গুলো সব কান্না হবে- কান্না সব ছাই হবে,
ছাই ফেলে সব হাত গোটাবে, হাতগুলো সব হারিয়ে যাবে,
শ্মশান বুকে একটি কাক প্রতীক্ষায় রবে ব্যবচ্ছেদের, ব্যবচ্ছেদ শেষে সেও পালাবে,
ক্লান্ত শ্মশান আসা যাওয়ায়, পুড়িয়ে সবাই ছাই রেখে যায়।


শরীর জুড়ে আষাঢ়- শ্রাবণ, গ্রীষ্ম-শরৎ-শীত,
নাই বাকি আর পৃথক আকাশ, পাহাড় জুড়ে বিষণ্ণ বাতাস,
সিলিঙ জুড়ে নীল খুলে, পরিপাটি রাত্রি জুড়ে ভীষণ পোড়ায় স্মৃতির খাতা,
এস্ট্রেতে তাই আকাশ জমে, সমুদ্র তার হৃদয় খুলে - বিশালতার নাটক সাজায়,
জমে জমে হিমালয় বানায়, বুকপকেট ছাড়া রাখবো কোথায়?


হৃদপিণ্ডটা খোলস হারা, মুখোস তার নাই চেনা,
জনে জনে নাটাই বেঁচে, নাটাই ছাড়া সুখ যায় কি ছোঁওয়া?
জাগতিক সব চাওয়া পাওয়া, ইচ্ছেরা সব বেপরোয়া,
এমন বিষের মিলবে কোথায় দেখা?


অবসরের চোখে ধূসর মেঘ,
আরো একটি রাত হারিয়ে গেলে, হারানোর আর কিই বা থাকে?
রোজ নিয়মে টহল দেয় নগর পুলিশ,
শরীর নামের বিষণ্ণ এক সাড়ে তিন হাত নেক্রোপলিস।


৩০ অক্টোবর, ২০১৮