শুধু ঘাস নয়,
কবি আর প্রেমিকের বুকে আছে চাষযোগ্য উর্বর জমি।
তাদের চোখে যতোটাই চাঞ্চল্য থাক, যতোটা কর্ষিত হউক গাল,
তাদের হৃদয়ে আছে এক নরোম নীলাভ নদী ও কার্পাস তুলো
এক আশ্চর্য সুখ তোমাকে ছুঁয়ে যাবে ভুগেনভিলিয়ার নির্মল বাগানে
দুঃখের নাম করে তাকে তুমি সরাতে চাইবে- ভুলে যেতে চাইবে সব সুন্দর
একবার তার সান্নিধ্য ছেড়ে গেলে তোমাকে ছিঁড়ে খাবে উইপোকা।
সত্য এবং খিদের মতো তোমার সামনে এসে দাঁড়াবে তুমি,
নিজেকে চিনতে না পারার অভিনয় এতোটা বাস্তব হবে না;
যা থেকে তুমি ভুলিয়ে দিতে পারবে নিজেকেই।
শুধু অপ্রেমে আর অবহেলায় নয়-
তাদের তুমি পাবে নিঙড়ে নেওয়া শেষ ফোটাতেও।
তোমাদের চোখের মণি আর হৃৎপিণ্ড তুলে নিতে এগিয়ে আসে-
অনিবার্য ধ্বংস এবং ঘোষিত যুদ্ধ
সামরিক কাফেলা আর ব্যারেলের সামনে ঔদ্ধত্য দেখাতে বুকের পাটাতন টান করে দাঁড়াতে পারে একমাত্র কবি এবং প্রেমিক।
তাই, তারা কেবল গভীরে যায় আর সেখানে চলে নিঃছিদ্র শুশ্রূষা।
তাদের আঙুল বাতাসকে নির্দেশ করে ফুলকে ছুঁয়ে
ফুল আর ফলে ভরিয়ে দিতে এ খিদার পৃথিবী, যাতে করে প্রেমিকারা চোখে আরো কিছুদিন কাজল দেয়।
তাদের মলিন চামড়া ধুলোজমা রাজপথের সবচেয়ে সুন্দর মনুমেন্ট,
অথচ তাদের রক্ত কেবল অতল ছোঁয়াতে পারে গুটি কয়েক অন্ধকে।  
কবি আর প্রেমিক কখনো আলাদা সত্ত্বা নয়।
শুধু কাঙ্ক্ষিত নারীর কোমর জড়িয়ে জল পান পুরুষকে প্রাথমিক প্রেমিক করে তুলতে পারে,
কবিকে তুষ্ট করে আরো গহীন কিছু, গোপন ক্ষতের দগদগে ঘা থেকে কবি পান করে স্বর্গীয় সুধা।
সে কেবল উচ্ছন্নে যায়, চোখের অন্তর্ভুক্ত নিশছিদ্র প্রতিমার পূজারী হবে বলে;
স্পর্শের জাগরণ তাকে ততোটাই আন্দোলিত করে যতোটা ভরা পূর্ণিমার চাঁদ নদীকে টেনে নিয়ে যায় গোপন ঘরে।
চোখের ভাষা, পাকস্থলীর গোপন কামড়, যা কিছু এড়িয়ে যায় লোকে
সহজ ভাষায় অনর্গল তা পড়ে নিতে পারে কেবলই কবি।
প্রেমিক সহজেই প্রেমিক, নারীপ্রেম জাগিয়ে তোলে যাকে তাকে- কবি প্রকৃতির সবটুকু নেয়।
কবি গভীরতা ছোঁয়, আকাশের উদাম বুকে হৃদয়ের নোঙর ফেলে নৃত্য করে;
গহীন অরণ্যের গান কান পেতে শোনে, সমুদ্রের দুর্বার ঢেউ বুকে নিয়ে শীতল জীবন পোহায়। আর...
আনকোরা এক আশ্চর্য সুখ তার বুকে অস্পৃশ্য থেকে যায় আমৃত্যু।


২৩ এপ্রিল ২০২০