বাল্য বিবাহ
মোঃ ইব্রাহিম হোসেন
অরিত্রিক কবিতা
অক্ষরবৃত্ত ছন্দঃ ৮+৬
তারিখঃ ০৬-০৭-২০২১'


আজ দেখি বাল্য বিয়ে - প্রতি ঘরে ঘরে,
কচি মেয়ে কাঁচা হিয়ে - মন থাকে ডরে।
খোকা বড় বুঝে সব - জ্ঞানে গুণে পাকা,
কন্যা বলে ওগো রব - এ কি মোর কাকা?


নাহি চিনে এতো দামি - জগতের সেরা,
ইনি যিনি তার স্বামী  - প্রেমে সে তো ঘেরা।
যৌবনেতে ভরপুর - খোকা ডাকে কাছে,
নাবালিকা কন্যা দূর - ভয়ে ভয়ে বাঁচে।


জোর করে ধরে তারে - ভালোবাসা দিয়ে,
এসো এসো মোর ধারে - প্রেম প্রীতি নিয়ে।
ডাকি ওগো দাও সাড়া - জান, প্রাণ-পাখি,
দেখে আমি দিশেহারা - ওই দুটি আঁখি।


নববধূ সাজে মেয়ে - যায় স্নেহ নিতে,
ওই বর আসে ধেয়ে - সব কিছু দিতে।
অবশেষে হয় মিল - বাসরের রাতে,
বিষে বিষে ক্ষত দিল - ঘাত-প্রতি-ঘাতে।


কান্না-কাটি করে ঘরে - অবুঝ সে মেয়ে,
অবিরত রক্ত ঝরে - দেখে সবে চেয়ে।
বধূ বলে আঁখিজলে - বিয়ে মানে সাজা,
যাবো নাকো যাঁতাকলে - হোক না'সে রাজা।


মাগো আমি নাহি চাই - গাড়ি-বাড়ি,শাড়ী,
করজোড়ে বলি তাই  - নাবালিকা নারী।
যদি যাই এই-বার - এ জীবন শেষ,
হয়ে যাবো ছারখার - আমি শেষ-মেশ।


মা ও বাবা কাঁদে হায় - করিলাম ভুল,
ঝরে শুধু অশ্রু তায় - ভুলের মাশুল।
আগে যদি জানিতাম - হবে যে এমন,
নাহি কভু মানিতাম - বুঝিনু যেমন।


শ্বশুর ও শ্বাশুড়িতে - অপবাদ দেয়,
আঁচলেরও ঝুড়িতে - পরকীয়া হেয়।
বউ মা'র আছে জানি - কারো সাথে প্রেম,
লোভে আছে এই বাণী - ভরি ভরি হেম।


বিনা সূতা বাঁধা তার - ছিন্ন হয়ে যায়,
ভাঙে যেন দেহ হাড় - হয় নিরু'পায়।
এই-ভাবে বাল্য বিয়ে - সঙ্গী টিকে না'যে,
কাঁদে বসে মা ও ঝিয়ে - মরে সদা লাজে।


সুন্দর জীবন নষ্ট - ভাঙে দুটি পাখা,
কপাল পোড়ার কষ্ট - গজে নাকো শাখা।
আসে নাকো বড় হলে  - বিয়ে শাদি আর,
লোকে বলে দেহ গলে - করে ব্যভিচার।


অপবাদ নিয়ে শিরে - কেউ হয় খুন,
পরিবারে ধীরে ধীরে - দেহে ধরে ঘুণ।
শান্তি যায় দূরে চলে - বুকে হাহাকার,
প্রতিবেশী লোকে বলে - এরা পাপাচার।


নারী জীবন ধ্বংস - এ বিয়ের ফলে,
উচ্চ সবের বংশ - লাথি মেরে চলে।
বাল্য বিয়ে বন্ধ করো - আইনের চাল,
সুখী হবে মনে ধরো - বিবাহের কাল।