পরশুরামের একটি গল্পে অনুপ্রানিত হয়ে---


তিন বিধাতা (বর্ণনা মূলক রম্য)(25/9/18)


বিশ্বমানবের মঙ্গলার্থে সাধুসন্ত প্রাজ্ঞ বিজ্ঞের আলাপ যখন ব্যর্থ,
শুরু হল ঐশ্বরিক স্তরে পৌঁছানোর তোড়জোড়।
জগতের কল্যাণে সাধু মহন্তরা
করলেন শুরু তপস্যা।


অকল্পনীয় স্বপ্ন হল সম্ভব,
ব্রহ্মা গড আল্লা এলেন হিন্দুকুশ।
অনুচর হিসাবে এলেন ব্রহ্মার সাথে নারদ,গডের সাথে সেন্ট পিটার,আল্লার সাথে এক পীরসাহেব।
ব্রহ্মা চতুরানন,চারহাত, দাঁড়ি গোঁফ,ধুতি চাদর,কাঁধে গোছা পৈতে,
মাথায় মুকুট।
গড নিরাকার,ভক্তগণের অনুরোধে এলেন জিহোবার মূর্তিতে,
বুক, মুখ, মাথাভরা কাঁচা পাকা চুল
দাঁড়ি,রাগী চেহারা দূর্বাসার মত,পরনে আলখাল্লা।
গডের চেয়েও নিরাকার আল্লা,কোনো ভাবেই মূর্তি ধারন,কথা বলায় নারাজ।


আল্লা সর্বত্র বিরাজমান,পির বললেন
হেঁকে।
খাড়া করে রাখছি চাঁদ মার্কা ঝান্ডা,
নীচে দাঁড়িয়ে আমি দেব উত্তর।
নারদ,পিটার রে রে করে বললেন, "তোমার নিজের কথা যদি বলওওও?"
আল্লা নারাজ হলে পবিত্র ঝান্ডা পড়বে মাথায় আমার।


সবাই রাজী,আল্লার সেবককে খুশী
রাখতে সবাই প্রস্তুত।
সভার কাজ শুরু হতে হোক আজ্ঞা, করজোড়ে বললেন পিটার।


অতঃপর ব্রহ্মা--আমার স্বর্গের ভাইয়েরা,আসমানি বরাদরান,এখন প্রথম কর্তব্য সভাপতি স্থির করা
আমি বড় আমিই সভাপতিত্বের হকদার।


বেঁধে গেল তর্কাতর্কি,গড বলেন তুমি একশ কুড়ি কোটির একজন,অদ্বিতীয়
ঈশ্বর আমি।
ওদিকে পীরসাহেব ইনিও ইনিও।
গড--আমরা দু'জনেই অদ্বিতীয় ঈশ্বর,আমি সিনিয়ার,আমিই সভাপতি।


ব্রহ্মা--গড দাদা,করেছ কবে জগৎ সৃষ্টি?
গড-পুত্র যিশু জন্মাবার চার হাজার
বছর আগে।
--তার আগে?
--ঈশ্বরের আত্মা জলমধ্যে ছিল
নিলীয়মান।
--ডুব মেরে ঘুমোচ্ছিলে?
আমাদের নারায়ন ভাসতে ভাসতে যান নিদ্রা।
আল্লা তালা কি বলেন?
পীর--কোরান শরিফ দেখবেন পড়ে,সব কিছু লিখা আছে।


কে ছোটো কে বড় বেঁধে গেল দ্বন্দ্ব।
গড--ব্রহ্মা তুমি উঠেছো বিষ্ণুর নাইকুনকুন থেকে,
জন্ম মৃত্যু আছে----
ব্রহ্মা--তাতে কি?বিশাল আমার এক একটি জীবনকাল,
একত্রিশের পিঠে তেরোটা শূণ্য দিলে যত হয় তত----
জলমধ্যে নিলীয়মান যখন তুমি,তখনও দেদার করেছি সৃষ্টি।


নারদ জোড়হাতে কন--প্রভুরা ছোটো বড় তর্ক থাক,তিন বিধাতায় করুন সভাপতিত্ব।
জগতে মারামারি দ্বেষ হিংসা প্রতারণা অত্যাচার লুন্ঠন কাটাকাটি দূর হোক,শান্তি আসুক ধরায়,
একটি উপায় করুন বার।
ব্রহ্মা--গড ভায়া উপায় বাতলাও।
আবার শুরু তর্কাতর্কি---
করুক ওঁরা স্থির,মর্তবাসী বলি সবে তিন বিধাতারই জিত।