একদিন মুসাফির বেশে
জগত সংসার ফেলে অবশেষে,
ধূ ধূ মরুভূমি পেরিয়ে ছুটে যাব;
যেখানে নির্জনতায় ঠায় দাঁড়িয়ে স্রষ্টার ঘর,
যেখানে অবসাদ নেই, যাপনে অবসর।


আমি খেজুর পাতার চাটাইয়ে শুইয়ে
মসজিদের বারান্দায়, ছায়াপথে নক্ষত্র গুনব,
আমার ভেতরে আমি প্রবল ক্ষিপ্রতায় ছুটব,
বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের আদি হতে অন্ত পর্যন্ত।


আমি খোদার আরশ খুঁড়ে খুঁড়ে
সন্ধান করব ভূপতিত কতক নক্ষত্র,
যারা অতলে তলিয়ে গিয়েছে মহাকালের গর্ভে।


ফজরের ওয়াক্তের পর, এক শীতের সকালে
আমার পিতার শত বছরের পুরোনো চাদর গায়ে জড়িয়ে,
আমি বুক ভরে বেরুব এক সত্য-সূর্য নিয়ে;
যে সূর্য আমার পিতা ধারন করেছিল,
যে সূর্যে মনুষ্যত্ব হয় মহিমান্বিত!
মরুর অচিন-দুর্গম প্রান্তে আমি সূর্য ছেড়ে দেব;
সত্য ছেড়ে দিলে সৃষ্টি স্রষ্টার কাছে চলে যায়;
পূর্বপুরুষ গিয়েছে, আমিও চলে যাব!


মহাকালের সমগ্র প্রাচীর ভেঙে
একে একে জড়ো হবে মহাবিশ্বের সব মুসাফির;
সত্য-সূর্যের সন্ধানে;
এরা মরুর বালি-ঝড়ের মুখোমুখি হবে,
অমানিশার ঘোর আধার, কিংবা
ঘন কুয়াশায় দিক ভ্রান্তিতে হবে পথভ্রষ্ট।


কারো কারো গায়ে পূর্ব পুরুষের বিশ্বস্ত চাদর থাকবে না!
কারো আলখেল্লা ঝলসিত হবে চন্দ্রালোকে;
জ্যোৎস্না, মরুর বালি ঝড় আর ঝলসিত আলখেল্লা
যেন মৃতপ্রায় নক্ষত্রের প্রজ্বলিত হবার অভিপ্রায়!


কিছু সত্য মরীচিকা হয়ে যায়, অবিশ্বাস্য সরলতায়,
মুসাফির সব দিবায়, বিভ্রান্ত হবে মরীচিকায়;
দিবা শেষে নিশা, কখনো জ্যোৎস্না, কখনো বা অমাবস্যা,
মুসাফিররা সব অশ্ব শাবকের ন্যায় ক্ষিপ্র হবে।


অতঃপর সুবেহ-সাদিকের লালিমা ভেদ করে,
সত্যের আলো এসে ক্ষান্ত হবে মসজিদ-মিনারে;
মুসাফির সব দলে দলে, প্রবেশ করবে স্রষ্টার ঘরে!


সময়ে সময়ে আযানের ধ্বনি, প্রতিধ্বনিত অনিকেতে,
গর্জে উঠবে সত্য সুন্দর, ফিরে যাবে সব নক্ষত্র,
স্বীয় মহিমায়, প্রজ্বলিত ছায়াপথে!