ছেলেটা আমার পাশ দিবে,
অনেক বড় সাহেব হবে।
কষ্ট করে আর কটা দিন,
তারপরেই তো আসবে সুদিন।
মাতিয়ে রাখছে পাড়া-পড়শী,
মায়ের মুখে কি যে হাসি।
কত কষ্ট অনাহারে
অন্যের বাড়ি কাজ করে,
ছেলেটাকে রেখে ঢাকায়
পড়াশোনার খরচ জোগায়।


প্রেমিকারও কত আশা
হবে এবার কাছে আসা।
কদিন পরেই শেষ পরীক্ষা,
অবসান হবে সব প্রতিক্ষা।
তারপর একটা চাকরি পেলে
বাবা-মাকে দেবো বলে।


ছেলেটারও দিন ফুরায়না,
মায়ের কষ্ট আর সয় না।
বৃদ্ধ বয়সে আর কত
সইবে মায়ে ক্ষিদের ক্ষত।
মেয়েটাও কম করেনি
এত ঝড়েও হাত ছাড়েনি।
যদি একটা চাকরি পাই
দুজনকেই নিয়ে আসবো ঢাকায়।


একাত্তরের সময়ের কথা
এখনো আছে স্মৃতিতে গাথা।
২৬ মার্চ আসেনি তখন
কথাগুলো হচ্ছে যখন।
এমন নয় একখানা,
অজস্র গল্প আছে জানা।


স্বপ্ন দেখার আরেকটি রাত,
হয়নি সেদিন শুভ প্রভাত।
২৫ মার্চ রাতের ঢাকায়
হায়নারা গনহত্যা চালায়।
মায়ের মুখে কান্না ভারি,
ছেলের লাশ আসলো বাড়ি।
প্রেমিকাও নির্বাক নিথর
ঝড়ছে চোখে অশ্রু অঝর।
ছেলের শোকে জননী পাথর
প্রিয়তমা দুঃখে কাতর।
এমন আরো কতগুলি
মায়ের বুক করল খালি।
পশুর মত পাকসেনারা
শিশুদেরও ছাড় দিলনা।
প্রেমিকার মত হাজার নারী
করলো পশুরা শ্রীলতা হানি।


নয়মাস ধরে যুদ্ধ হল,
কত কিছু ঘটে গেল।
ছেলের রক্তে, মায়ের দুখে
বীরঙ্গনা প্রেমীকার বিরহে,
অসংখ্য গল্পের আত্মত্যাগে
স্বাধীন হলো একটি দেশ,
বাংলাদেশ, বাংলাদেশ।।