১.
পূর্ণিমার চাঁদ হয়ে এসেছ  তুমি,
অগোছালো  চুল, কাজল কালো আখিঁ,
কপালে লাল রঙের টিপ,
কানে ঝুমকা পড়ে ছুটে চলে গ্রামের তেপান্তরে,
সে যে আমার বান্ধবী  হিয়া।
২.
গ্রীষ্মের প্রখর রোদে চাষিরা মাঠে কাজ শেষে,
গোধূলি  বেলায় ঘরে ফেরে,
মাঠ থেকে ফেরা চাষিদের কলরব,
তাদের বর্গীর গান, দুঃখের কথা,
কেউ জানে না, তাদের কথা সে ভাবে।
সে যে আমার বান্ধবী  হিয়া।
৩.
বর্ষা বাদল দিনে, মন উড়ে যায় শূন্য  পাণে,
পাখি  হয়ে উড়তে চাই কোন অদূরে।
ঝিরি ঝিরি বৃষ্টিতে ভিজে,
বৃষ্টির সাথে লুকাচোরি খেলা খেলে।
নদীর কুহুধ্বনি , থৈ  থৈ  করা জল ভরা মাঠ,
ক্ষেত ভরা বর্ষার ধান দুলে দুলে নাচে।
এই অপরুপ দৃশ্য  দেখে নেচে উঠে তার মন,
সে যে আমার বান্ধবী  হিয়া।
৪.
বর্ষার বিদায় বেলায় এসেছে শরৎ,
একঝাঁক পাখি মেলেছে ডানা,
ওই সাদা মেঘের দেশেতে।
নদীর পাড়ে বসেছে,
কাশবনের কাশফুলের মেলা।
শিউলি ফুলের গন্ধে এলমেলো হয়ে যায়  তার মন।
সে যে  আমার বান্ধবী  হিয়া।
৫.
শরতের শেষে এসেছে হেমন্ত,
মাঠে মাঠে পাকা ধানের গন্ধ।
কৃষকের বধূ  সোনালি ধানগুলি বয়ে,
নিয়ে চলে গোলার দিকে এক আপন ছন্দে।
পাখিরা উড়ে এসে বসে খামারতটে,
খুঁটে খুঁটে ধান খায়।
এই নিয়ে লিখে কবিতা ছন্দে, পরমানন্দে।
সে যে আমার বান্ধবী  হিয়া।
৬.
শীতের সকাল, লেপের ভিতর থেকে
পাখির ডাকে ঘুমের দেশ হতে জেগে ওঠে,
জানালা দিয়ে তাকিয়ে থাকে সূর্যিমামার পানে।
সরষে ফুলের গন্ধে ভ্রমর গুলো  ছুটে,
মিষ্টি  মধুর খোঁজে।
ঘন কুয়াষা দেখলে ভাবে,  শীতটা কবে যাবে যাবে।
একেব্বারেই ভাল লাগেনা যে,
ব্যাকুল মন যে কেঁদে  ওঠে তার,
সে যে আমার বান্ধবী  হিয়া ছাড়া কার।
৭.
বসন্ত এসে গেছে,  লিখেবে কবিতা, গান।
নতুন সূর্যিটাকে নতুনরুপে দেখিবে আজ।
গ্রামে গ্রামে মেলা বসে ঘুরিবে  কত?
সেখানে কিনবে খেলনা বাটি আর  পুতুল ছাড়া আর কত।
বসন্তের ডালে ডালে, পাখিদের সঙ্গে নাচিবে সে কত?
আমবনের আম্রমুকুল গাছে গাছে ভরিবে কবে,  
ভাবিতে ভাবিতে বেলাশেষে গাহিবে বাউল  গান।
সে যে আমার বান্ধবী  হিয়া , বলিব কত কথা তার।