কবিতা:- ভূতের মুখেও রাম নাম
কবি:- মনোজ ভৌমিক


ছোট্ট একটি শ্যাওড়া গাছে পা দোলাচ্ছে মামদো ভূতের ব্যাটা ন্যাবাকান্ত,
বলছে ঝুঁকে শাঁকচুন্নিকে,"হ্যাঁ রে,হোথায় নাকি আজকাল এসেছে বসন্ত?
তাই বুঝি তুই হাড় কপালে এঁকেছিস টুক কালসিটে এক হসন্ত?
ডোবার ধারে ঘুরে ফিরে ও সব যা তা মাছ খুঁজছিস কেন বলতো?
আয়না হেথায়, এই প্রাণেতে লাগিয়ে নিই আজ আগুনলাগা বসন্ত।"
"আ: মলো যা: জানিস কি তুই, পিছে আমার লাইন আছে কত্ত?
তাই তো আমার সেল ফোনটা দেখনা সদাই থাকে ব্যস্ত।"
এই না শুনেই চোখ কপালে গর্জে উঠলো মামদো ব্যটা ন্যাবাকান্ত,
" কি বললি তুই? আমায় ছেড়ে অন্য কারে? চিবিয়ে খাবো তোরে আস্ত।"
এই না বলেই ধড়াস করে ডালি ভেঙে পড়লো হঠাৎ নীচে,
গিড় গিড়িয়ে কোমর ধরে দৌড়ায় ব্যটা শাঁকচুন্নির পিছে পিছে।
শাঁকচুন্নি চালাক বড্ড,কল করলো ভূতের রাজা লুল্লুকে।
লুল্লু ব্যটা এলো দারুণ কেঁপে ভূত পুলিশদের সাথে।
রাজায় দেখে শাঁকচুন্নি তারে ধরলো বুকে চেপে।
বললো কেঁদে,"প্রেম ভিখারীর রাস্তা দেনা মেপে।"
লুল্লু তখন বললো রেগে," ভয় পাস না আমার সখী,
এখন আমি এসে গেছি,তোরে ছোঁয়ার হিম্মৎ ওর দেখি!"
ন্যাবাকান্ত বলছে হেসে,"রাজামশাই এক্কেবারেই ভোম্বল!
এক প্রেমিককে মারতে এসে,গায়ে নেবেন নাকি কম্বল?"
এই কথাতেই লুল্লু রাজা উঠলো দ্বিগুণ কেঁপে,
রাজার কাঁপন দেখে পুলিশ নিল রাস্তা মেপে।
রাজা তখন ভয়ের চোটে বন কাঁপিয়ে উঠল দারুণ হেঁকে,
বনের যত পশুপাখি ঝাঁক বেঁধে সব পালালো বনের থেকে।
লুল্লু বললো,"কে আছিস? তলোয়ারটা নিয়ে আয় এ পর্যন্ত,
আজ বসন্ত দিনে খেলবো হোলী রক্ত ঝরিয়ে ন্যাবাকান্তর।"
এই কথাতেই বনের থেকে বেরিয়ে এলো শাঁকচুন্নির শত প্রেমিক দল,
বললো সবাই,"রাজার সাথে খেলবো রক্ত হোলী,দেখি রাজার কত বল?"
এই না শুনে লুল্লুরাজার তখন শুরু হলো দারুণ হৃৎকম্পন,
বললো রাজা ঘাবড়ে গিয়ে,"করছি তোদের শাঁকচুন্নিরে অর্পণ।"
প্রেমের আগুনে জ্বললো ফাগুন ভীত  শাঁকচুন্নির অন্তর,
বললো সবাই সমস্বরে,"শাঁকচুন্নিটার হোলীকা দহন কর।"
ন্যাবাকান্ত বোঝালো তাদের,মানছি ওর দোষ এক্কেবারে ষোলোআনা,
তবুও আজকের দিনে নারী জ্বালিয়ে নারীত্বের কোরো না অবমাননা।