কবিতাঃ- দৌড়
✍️ মনোজ ভৌমিক


দৌড় প্রতিযোগিতার শুরুতেই প্রতিটি প্রতিযোগী বাঁ পায়ের টো টা মাটির বুকে দাবিয়ে,সম্পূর্ণ শরীর সামনে ঝুঁকিয়ে ডান পায়ের টোতে চাপ দিয়ে হাত দুলিয়ে বেগ প্রাপ্তির প্রচেষ্টায় মরিয়া হয়ে ওঠে!
অরিত্রও তাই শুরু করেছিল। জীবন যুদ্ধের এই দৌড়ে গতি প্রাপ্তির জন্য পিছনের মাটি ঠেলে সামনে এগিয়ে যেতে। দৌড় তো ও শুরুই করেছিল, কিন্তু লাইনের পিছনের মাটি এক্কেবারে পলিতে ভরা! দৌড় শুরুর সে বল ও পেল না।
পাবে কি করে?  জীর্ণ শীর্ণ একান্নবর্তী পরিবারের ভিতই ছিল এক্কেবারে খোকলা! নামের তালপুকুর,ঘটি ডোবে না! চোরা বালির উপর দাঁড়িয়ে অরিত্র স্বপ্ন দেখে ভীষণ জোরে দৌড়ানোর। পিছনে তাকিয়ে দেখে বেশ কয়েকটি আগামী প্রতিযোগীদের উদ্ভাবনী মুখ! সংসারের বড় ছেলে হওয়ার দরুণ অরিত্র স্বার্থপরের মতন একা দৌড়ানোর ইচ্ছা ত্যাগ করে,পলি মাটিতে এঁটেল মাটি ফেলতে শুরু করলো। ধীরে ধীরে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র মজবুত হতে থাকে। আজ যখন সে অর্ধেক রাস্তায় তখন সামনে তাকিয়ে দেখলো পিছনের প্রতিযোগীরা বেশ এগিয়ে গেছে! তার মনে এক অসীম প্রশান্তির বাতাস।
সীমানা না ছুঁয়েও যেন দৌড় প্রতিযোগিতা শেষ করেছে সে!
আর একবার পিছন ফিরে দেখলো সে, পুত্র মৈনাক সবে দৌড় শুরু করেছে। দূর থেকেই সে চিৎকার করে অরিত্রকে জিজ্ঞাসা করছে,
---পাপ্পা,তুমি সীমানা ছোঁবে না??
অরিত্র শুধু মুচকি হেসে উত্তর দিল,
--- ওটা তোর জন্য...