কবিতাঃ- একাত্তরের জন্ম কোন্ সুদিনের অপেক্ষায়
✍️ মনোজ ভৌমিক


কবিতা এখন ভ্যারেন্ডা বৃক্ষের মত ধূ ধূ মরুভূমির নির্জল বালুরাজ্যে দণ্ডায়মান।
তৃষ্ণার্ত দৃষ্টিতে দুর্বৃত্ত সময়ের প্রতিটি পল পর্যবেক্ষণ করছে।
সাতচল্লিশের রিক্ত উচ্ছাস বুকে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে
হৃদয়ে দাগ কেটে ছিল বিপ্লবী বাহান্ন।
বাষট্টি ও পঁয়ষট্টির বিদগ্ধ রক্তক্ষয়ী যন্ত্রণা হৃদয়ের
দক্ষিণ অলিন্দে, মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছিল।
৯ই ফাগুনের দানবীয় পৈশাচিক উল্লাস জন্ম দিল একাত্তরের।
অসীম মুক্তির আনন্দে উচ্ছোসিত আকাশ বাতাস।
ভাবনার সুখস্মৃতি বুকে নিয়ে এগোতে এগোতে দেখলো... ভয়ঙ্কর মন্বন্তর!
রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্ভিক্ষ, বেকারত্বের দুর্বিসহ যন্ত্রণা অবিদিত নয় ওর কাছে,
তবুও কবিতা মুখ বুজে হেঁটেছে।
সমৃদ্ধির সিঁড়িতে পা দিতে গিয়ে দেখলো,
বিশ্বময় বারুদী উষ্ণায়ণের দামামা!
পিছু হাঁটেনি একটিবারও।
ভূমিকম্পে বিদ্ধস্ত পশ্চিমাঞ্চল,
সুনামি বদলে দিল দাক্ষিণাত্যের মানচিত্র!
উন্মাদ ঝটিকা প্রবাহে মুহুর্মুহু ক্ষত বিক্ষত দেহ সৌষ্ঠব!
তবুও কবিতা অবিচল।
আজ যখন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছে ভয়ঙ্কর মহামারী,
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পারমানবিক ও জৈবিক ছায়াযুদ্ধের প্ররোচনা,
তখন কবিতা কিংকর্তব্যবিমূঢ়ের মত নীরবে করে অশ্রুপাত।
চারিদিকে যখন বিসর্জনের বাজনা বাজছে, ধর্মান্ধ অন্ধকার নেমে আসছে পৃথিবীর বুকে,
কবিতার মনে এক গভীর প্রশ্ন,
একাত্তরের জন্ম কোন্ সুদিনের অপেক্ষায়!