কবিতা:-জীবনসাথী
          মনোজ ভৌমিক


ওর সাথে সেরকম কোনো ফটো আমি তুলি নাই ,
থাকলেও দূরে দূরে থেকেছি সদা সর্বদাই।
কারণটা ভীষণভাবেই জানতে চাইবে তুমি,
এ কথাটা আজ জানে কেবল ঐ অন্তর্যামী।
ওদিনের শুরুর থেকে নিয়ে এ পর্যন্ত আজ,
ওর চোখে এখনও দেখি সেই বিনম্র লাজ।
মুখের মধ্যে আজো রয়েছে সেই তিরতিরে হাসি,
শত দু:খ-কষ্টেতেও তেমন হয়নি বাসী।
অনেক মরুঝড় চলছি আজও এ বুকে নিয়ে,
হাতে হাত রেখে ভরসার সাথে চলছি এগিয়ে।
উন্মাদ সাইক্লোনে বার বার ভেঙে এ বুক,
সমুদ্র ঢেউয়ের মত দিতেছে আমারে সুখ।
বলেছে আদর দিয়ে আমায়,"এ আমাকে তো দেখো...
হাজার আঘাতেও আজো আমি রয়েছি যে অক্ষত । "
যখন চাঁদের আলো নামে এই ধরনীর বুকে,
হাসি মুখে ওরে জড়িয়ে ধরি মহানন্দ সুখে।
টিন ভাঙা চাল বেয়ে আজ দেখি খোলা রোদ্দুর,
তবুও সিঁথিতে জাগে ওর আমার সোহাগী সিঁদুর।
চাঁদ ঝরা বিছানায় জেগে আছে ফাটা যে তোষক,
তবু তাতে ঘুমোতে নেই তার এত টুকুও শোক।
বিবর্ণ কুন্তলরাশি জলে নেয় ভিজায়ে,
দীর্ঘ চিকুর সে দেখায় যে আমারে সাজায়ে।
জীবনের ওঠানামা, সকল গভীর অনুভূতি,
ওরই দুই নয়নেতে আজও জেগে আছে দেখি।
নেই তার মনে আজ বেড়ে ওঠা আধুনিক আশ,
বলছে মিষ্টি হেসে,"ওসব ব্যর্থ প্রয়াস।"
সময়ের গভীর অনুভব, যেন কোন বিদুষী!
জীবনের প্রতিপলে ও আজ দারুণ সাহসী।
যে টুকু প্রয়োজন ততটুকুই চায় জানি,
বলে,"তোমার চেয়ে আমার কাছে কিছু নয় দামি।"
বর্ষা আকাশ হতে অঝরে ঝরলেও বারিরাশি,
ওর চোখে খুঁজে নিই আমি জীবনের সব খুশি।