কবিতা :-খুব জানতে ইচ্ছে করে
            মনোজ ভৌমিক


অনিকেত,
তোর মনে পড়ে?....তখন আমি ফাইভে আর তুই ক্লাস সেভেনে পড়িস।
প্রতি বছরের মত সরস্বতী পুজোর দিনে আমি লাল পেড়ে হলুদরাঙা শাড়ি পরেছিলাম। আর তুই! বাবু পাঞ্জাবি সাদা চোস্তা, কাঁধে সাইড ব্যাগে.. কি সুন্দর দেখাচ্ছিলো তোকে...
পুষ্পাঞ্জলি দিয়েই কোঁছড়ে টোকো কুল আর তোর জন্য আনা তিলের নাড়ু নিয়ে দে ছুট....
এক্কেবারে হলুদ গাঁদার মাঠ পেরিয়ে নদীর চরে।
তুই হাফ ছাড়তে ছাড়তে ব্যাগের থেকে লাটাই নিয়ে সূতো বেঁধে আমার হাতে ঘুড়ি ধরিয়ে দিতিস।
আমি উড়িয়ে দিলেই...তুই কি  সুন্দর করে আকাশে উড়াতিস!
আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত তোর দিকে চেয়ে চেয়ে কুল খেতাম।
যখন তোকে নাড়ু খাইয়ে দিতাম, মাথায় টোকা দিয়ে বলতিস,
"জানিস,ঘুড়ি আর লাটাইয়ের সূতো মজবুত হওয়া উচিত।
যেমন তোর আর আমার মধ্যে...'মন'!"
আমি আবাক হয়ে তোর কথা শুনতাম আর ভাবতাম!
ভাবতে ভাবতে দিনের আলো নিভে গিয়ে সন্ধ্যা ছুঁই ছুঁই... হঠাৎ দাদার 'অর্পি' ডাকে ঘাবড়ে গেছিলাম!
কিছু বুঝে ওঠার আগেই দাদা তোর ঘুড়ির সূতো কেটে বেশ কয়েকটি কিল মারলো!
আমার ভেজা চোখ তোর অসহায় নির্দোষ চেহারা দেখার আগেই দাদা আমায়.....
তারপর থেকে তোর আমার  দেখা নেই, আমরা হলাম  শহরবাসী।
আজ আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে অনিকেত...
তোর ঘুড়ি আর লাটাইয়ের মজবুত সম্পর্কের সুতো কেমন আছে!