কবিতাঃ- ক্ষুধার্ত বাজেল মতন
           মনোজ ভৌমিক


একটা বাজ! ক্ষুধার্ত! ভীষণ ক্ষুধার্ত!
নিশুতি রাত; ঘন অন্ধকারময় জঙ্গল!
উঁচু গাছটার ডালে বসে, গভীর প্রতীক্ষা।
একটা রোম-হর্ষক সকালের।
দারুণ ক্ষুধায়, এক্কেবারে নিঃস্পন্দ।
রক্তাভ দু'টি চোখ, শুধুই দেখতে থাকে-
রক্ত চোষা বাদুড় আর চামচিকিদের
শিকার ধরার উন্মাদ উপদ্রব।
ক্ষুধার জ্বালা আরো প্রকট হয়ে ওঠে তার।
ভাবতে থাকে, জঙ্গলের সমস্ত শিকারগুলি
হয়তো নিঃশেষ হয়ে যাবে।


অবশেষে, আকাংক্ষিত সকাল।
প্রত্যুষের আলোয় সে দেখলো,
জঙ্গলে নেই কোনো শিকারের চিহ্ন!
কি করবে সে! পেটে তার অনন্ত ক্ষুধা!
বুভুক্ষু বাজ, রিক্ত ডানা মেলে
উড়লো সুদূর আকাশে।
সেখান থেকে, পৃথিবীর কোনো এক শহরের
রাস্তায়, তার ছায়া প্রায় নিশ্চিহ্ন।


সুতীক্ষ্ণ ক্ষুধার্ত দুটি চোখ, সুদূর আকাশ থেকে
শিকার খোঁজে।
শহরের নর্দমার ধারে নয়তো
ভাঙা চোরা বাড়ীর স্তুপে।
শিকার খোঁজে, শুধু একটা শিকার!
ভয়ঙ্কর ক্ষুধা!
সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে এসেছে
ক্ষুধার জ্বালায় মরিয়া হয়ে উঠেছে সে।
ক্ষুধার জ্বালা, ভীষণ জ্বালা!


অকস্মাত্, ভয়ঙ্কর ডানার শব্দে
ছোঁ মেরে উড়িয়ে নিয়ে গেলো
এক মৃত প্রায়, সদ্য নর্দমা থেকে
বেরিয়ে আসা,  রুগ্ন ইঁদুরটাকে।


এমনিভাবে, পৃথিবীর সমস্ত ক্ষুধার্ত শক্তি,
ঝাঁপিয়ে পড়ে, আগ্রাসী প্রাণে,
ক্ষুধার্ত বাজের মতন,
সমস্ত দূর্বল শক্তির উপর।
প্রতিবাদ হয় না।
কেবলই নীরবে, নিঃশেষ হয়ে যায় তারা।